ঢাকার ব্যাংকিং মানচিত্রে মতিঝিল ও গুলশান এখনো প্রধান কেন্দ্র হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। রাজধানীর ৫৭ থানার মধ্যে এই দুই এলাকায় দেশের মোট ব্যাংক আমানতের প্রায় ২০ শতাংশই রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মতিঝিল ও গুলশানের ব্যাংক আমানত মিলিতভাবে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯৬ হাজার ৭২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকায়। এর মধ্যে মতিঝিলের অংশ ১০.২ শতাংশ, আর গুলশানের ৯.৭ শতাংশ।
মতিঝিল দীর্ঘদিন ধরে দেশের ব্যাংকিং ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র। বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জসহ অধিকাংশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় একসময় এখানে ছিল। যদিও এখন অনেক ব্যাংক গুলশানে স্থানান্তরিত হয়েছে, তবুও মতিঝিল লেনদেনের পুরোনো কেন্দ্র হিসেবেই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, গুলশান এলাকায় বহুজাতিক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি লেনদেনকে তুলনামূলকভাবে আরও বাড়িয়েছে।
এদিকে, ব্যাংক আমানতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে ভাষানটেক। ২০২৫ সালের জুন শেষে ব্যাংক হিসাব ছিল পাঁচ হাজার ৭২৫টি। এক বছর আগে (২০২৪ সালের জুনে) যা ছিল পাঁচ হাজার ৬৫৪টি। অর্থাৎ এক বছরে বেড়েছে মাত্র ৫১টি হিসাব। এসময়ে আমানত বেড়েছে পাঁচ কোটি চার লাখ টাকা।
ব্যাংকারদের মতে, ভাষানটেক তুলনামূলকভাবে নতুন ও নিম্ন আয়ের এলাকা। এখানে বড় কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নেই, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ব্যক্তিগত সঞ্চয়ই ব্যাংক আমানতের প্রধান উৎস। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস বেশি থাকার কারণে হিসাব ও আমানত কম থাকা স্বাভাবিক।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক আমানতের ভৌগোলিক বণ্টন ঢাকার বাণিজ্যিক ভারসাম্য বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এই সূচকে মতিঝিল ও গুলশান এখনও রাজধানীর আর্থিক কেন্দ্রস্থল, আর ভাষানটেক কেবল পথচলা শুরু করেছে।


