চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নভেম্বরের ১০ দিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১০ কোটি মার্কিন ডলার, ১৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে দেশে আসছে প্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। এই প্রবাহ অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৮ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে রেমিট্যান্স ছিল ৮২ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে মোট ১,১২৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি প্রদর্শন করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয় জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ এবং অক্টোবরে ২৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।
উল্লেখযোগ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পূর্ববর্তী অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে মোট রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার। ওই অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স জুলাইয়ে ১৯১.৩৭ কোটি, আগস্টে ২২২.১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০.৪১ কোটি, অক্টোবর ২৩৯.৫০ কোটি, নভেম্বর ২২০ কোটি, ডিসেম্বর ২৬৪ কোটি, জানুয়ারি ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি ২৫৩ কোটি, মার্চ ৩২৯ কোটি, এপ্রিল ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি এবং জুনে ২৮২ কোটি ডলার।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রবাসী আয়ের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বাড়াচ্ছে এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও রপ্তানি খাতকে শক্তিশালী করতে সহায়ক হচ্ছে। দেশের মুদ্রার মান, বাণিজ্যিক ব্যালান্স এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধেও এ ধরনের রেমিট্যান্স প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি, সামাজিক ও মানবিক খাতেও সাহায্য বাড়িয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।


