ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

দামে টালমাটাল সবজির বাজার

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
সবজির বাজার। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীসহ দেশের বাজারে হঠাৎ অস্থিরতা দেখা দিয়েছে নিত্যপণ্যের দামে। সবজিতে ভরপুর বাজার থাকলেও দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। কয়েকদিন স্থিতিশীল থাকার পর আবারও বেড়েছে পেঁয়াজ, ফার্মের ডিম ও মুরগির দাম। এতে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস চরমে উঠেছে।

গত চার-পাঁচ দিনে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫-২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও মানভেদে কেজি ৬০–৬৫ টাকায় পাওয়া যেত।

ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে। সঙ্গে বর্ষার বৃষ্টিতে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটেছে, যা দামের ওপর প্রভাব ফেলছে।

সবজির বাজারেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। করলা, কাঁকরোল, বরবটি-প্রায় সব সবজির কেজি ৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে। আমদানি করা টমেটো কেজিতে ১৪০-১৫০ টাকা। কাঁচা মরিচের দামও মাসখানেক আগে ৮০-১২০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৮০-২০০ টাকা কেজি হয়েছে।

ডিমের বাজারেও উর্ধ্বগতি দেখা গেছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। পাড়ামহল্লার দোকানে দাম আরও কিছুটা বেশি। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি-ব্রয়লার কেজি ১৭০-১৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০-৩৩০ টাকা, যা আগে কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, টানা চার মাস কমার পর জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। জুলাইয়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ-দুই ক্ষেত্রেই আগের মাসের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হওয়ায় দাম বাড়ছে এবং মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করেন, বাজারের মৌলিক কাঠামো ঠিকভাবে কাজ করছে না, বিশেষ করে সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের এখনই পণ্যের চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য আনার উদ্যোগ নিতে হবে, কারণ শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।