১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও বয়সসীমা অতিক্রম করায় নিয়োগের আবেদন করতে পারছেন না ৬৫ জন প্রার্থী। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেই সুযোগ মেলেনি।
বিষয়টি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন, আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে ফুলকোর্টের পরবর্তী শুনানিতে। এই ৬৫ জনের ভাগ্য এখন নির্ভর করছে আদালতের রায়ে, যা তাদের শিক্ষকতার স্বপ্ন পূরণে শেষ আশার আলো হয়ে উঠতে পারে।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশনার বিরুদ্ধে একটি রিভিউ আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) ফুলকোর্টে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনটিআরসিএ’র সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। চূড়ান্ত নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
২০২৩ সালের ২ নভেম্বর ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। ফেনীর রুহুল আমিন আরাফাতসহ ৬৫ জন প্রার্থী পরীক্ষার সব ধাপ সফলভাবে পাস করেন।
কিন্তু চলতি বছরের ১৬ জুন এনটিআরসিএ ৬ষ্ঠ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করলে দেখা যায়, সেখানে আবেদনকারীর বয়সসীমা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ওই ৬৫ জন আবেদন করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হন।
রিটের শুনানি শেষে গত ৮ জুলাই বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট ৬৫ প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দিতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ দেন।
তবে এই নির্দেশনার ওপর আপাতত স্থগিতাবস্থা বিরাজ করছে। আগামীকাল সোমবার (২১ জুলাই) শুনানির পরই জানা যাবে, ওই ৬৫ জনের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার মিলবে কি না।
২০২৩ সালের ২ নভেম্বর ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসি। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ফেনীর রুহুল আমীন আরাফাতসহ ৬৫ জন প্রার্থী ১৮ তম নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এমসিকিউ, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
পরে গত ১৬ জুন ষষ্ঠ নিয়োগে সুপারিশের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসি কর্তৃপক্ষ। তবে সে বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য প্রার্থীর বয়সসীমা বিজ্ঞপ্তির তারিখ সর্বোচ ৩৫ বছর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রুহুল আমিন আরাফতসহ ৬৫ জন প্রার্থী আবেদনের সুযোগ না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ৮ জুলাই বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৮তম নিবন্ধন সনদধারী ৬৫ প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। ৯ জুলাই ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত ‘নো’ অর্ডার আদেশ দেন। পাশাপাশি এই ৬৫ জনের আবদনের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর বয়সের শর্তটি শিথিলের আদেশ দেন।
গত বছরের ১২ ও ১৩ জুলাই ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। তাদের মধ্যে ৮১ হাজার ২০৯ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে চূড়ান্তভাবে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন।