চাকরির ক্ষেত্র ও একাডেমিক সুযোগ সুবিধায় বিভিন্ন বৈষম্যের অভিযোগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে আন্দোলন করে আসছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোনো সন্তোষজনক সমাধান না পেয়ে গত ২৭ জুলাই দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ঘোষণা করেন তারা। প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চললেও ক্লাসে ফিরেনি শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১৫ সালে এই বিভাগটি চুয়েটের পুরকৌশল অনুষদের অধীনে পুর ও পানিসম্পদ কৌশল নামে যাত্রা শুরু করে । তবে ৩ বছর পর ২০১৮ সালে বিভাগের নাম এবং ডিগ্রি পরিবর্তন করে পানি সম্পদ কৌশল নাম দেওয়া হয়। ফলে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। তাই এই সমস্যা উত্তরণের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা এক দফা দাবি উত্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত এক দফা দাবি হচ্ছে ‘দ্রুত বিভাগের নাম পূর্বের ন্যায় পুনঃসংস্কার করে পুর ও পানি সম্পদ কৌশল কৌশল করতে হবে এবং পুর ও পানি সম্পদ কৌশল হিসেবে ‘১৯ ব্যাচ থেকে ডিগ্রি প্রদান করতে হবে।’
শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগে দুই দফায় একই দাবিতে আন্দোলন করে তারা প্রশাসনের আশ্বাসে ক্লাসে ফিরেছিলেন, কিন্তু কোনো বাস্তব সমাধান পাননি।
বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হীরা দত্ত বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে রাখতে চাই যে, যত দ্রুত সম্ভব যেন যৌক্তিক সমাধান দিয়ে বিষয়টা সুরাহা করেন। কেননা ৩ সপ্তাহ আমরা ক্লাস করতে পারিনি, যেটি আরো দীর্ঘায়িত হচ্ছে। নিরপেক্ষ কমিটির কাজ চলমান হলেও আমরা বিভাগের তালা খুলে দিয়ে তখনই ক্লাসে ফেরত যাবো, যখন একটা চূড়ান্ত যৌক্তিক সিদ্ধান্ত দেয়া হবে, যে সিদ্ধান্ত আমাদের প্রতি বৈষম্যের অবসান ঘটাতে সক্ষম হবে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও প্রশাসনের আশ্বাসে ক্লাসে ফেরত গিয়ে কোনো ফলাফল পাইনি। বিভাগের ১৯ ব্যাচ এর মধ্যে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে চাকরি ক্ষেত্রে ১৮ ব্যাচের মতোই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। যেন পরবর্তী কোনো ব্যাচকে শিক্ষিত বেকার তকমা নিয়ে দিন অতিবাহিত করতে না হয়। তাই এবার চূড়ান্ত যৌক্তিক ফলাফল আসা পর্যন্ত বিভাগ বন্ধ থাকবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছা. ফারজানা রহমান জুথি রুপালী বাংলাদেশকে জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং তাদের ক্লাসে ফেরানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ও কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কিত সর্বশেষ তথ্য শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভাগের এই অবস্থার কথা কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়ে আসছি। তারা বলছে শিক্ষার্থীদেরকে বোঝানোর জন্য, যে যত দ্রুত সম্ভব কমিটির কার্যক্রম শেষ করা হবে। দুর্ভাগ্যবশত, একজন বিশেষজ্ঞের পদত্যাগের কারণে কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের গতকালও জানানো হয়েছে কমিটি আসছে। আজকে সম্ভবত এক্সপার্টদের বসার কথা রয়েছে। কিন্তু তবুও আমরা তাদের আশ্বস্ত করতে পারছি না। তারা সমাধান ছাড়া ক্লাসে ফিরতে চাচ্ছে না।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন