ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

চুয়েটে মধ্যরাতে দুইপক্ষের উত্তেজনা, আহত একাধিক

চুয়েট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১১:২৭ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ তারেক হুদা হলের পেছনে ও ড. কুদরত-ই-খুদা হলের সামনে এই সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনায় অন্তত দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। আহতরা হলেন- পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম এবং পুরকৌশল বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাওয়াদুল করিম জামি।

ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে মো. সিয়াম জানান, ‘আমি শহীদ তারেক হুদা হলের ক্যান্টিনে বসে খাবার খাচ্ছিলাম। সে সময় আমার বন্ধু আবির (হোসাইন শহীদ আবির) আমাকে কল দেয়। তাই আমি তার সাথে কথা বলতে যাই। সেখানে তারা ৭-৮ জন বিভিন্ন ইস্যুতে আমাকে প্রশ্ন করা শুরু করে ও একপর্যায়ে আবির আমার গায়ে হাত তুলে।

এরপর আমি আক্ষেপ নিয়ে সেখান থেকে চলে আসা শুরু করি। তখন আমার এক বন্ধু আমাকে কল দিলে আমি তাকে সামনে আগাতে বলি।

কিন্তু ঠিক ওই সময় আবিরসহ ওরা আমার দিকে ছুটে আসে ও আমাকে পেছন থেকে লাথি মারে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। তখন ২৩ ব্যাচের জামি আমাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসে। তখন তারা ২২ ব্যাচের ৪ জন মিলে জামিকে মারধর করে। পাশাপাশি ওরা ২১ ব্যাচের ভাইদের গায়েও হাত তুলে। তৎক্ষণাৎ হলের অনেক শিক্ষার্থী এগিয়ে আসলে তারা দৌড়ে অন্য হলে (ড. কুদরত-ই-খুদা) প্রবেশ করে।’

অপরদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। মো. সিয়াম তখন হঠাৎ রাগারাগি করে চলে গেলে ওদের হল (শহীদ তারেক হুদা) থেকে অনেকজন শিক্ষার্থী আমাদের দিকে আসা শুরু করে। তখন আমরা কোনোভাবে সেখান থেকে ড. কুদরত-ই-খুদা হলে প্রবেশ করি।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল রাফি তানিমও একই বিবরণ দেন।

বিভিন্ন শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, সিয়াম ও আবির একসময় ভালো বন্ধু হলেও, ছাত্রদলের দুই গ্রুপে যুক্ত থাকায় তাদের মধ্যে কোন্দল দেখা দেয়।

সিয়াম অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের কাজে তারা বেশি সক্রিয় থাকায় অন্য গ্রুপ সুবিধা করতে পারছে না। এই ক্ষোভের কারণেই তাদের ওপর হামলা হয়। এ হামলার পেছনে চুয়েট ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি ওয়াসিফ রাশেদের হাত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

এই অভিযোগ ও ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ তৈরির ব্যাপারে চুয়েট ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি ওয়াসিফ রাশেদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ বানোয়াট একটা কথা। এই ঘটনার সাথে ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুই বন্ধুর কথা কাটাকাটি থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। ছাত্রদলের মধ্যে দলীয়করণ হওয়ার এখনো কোনো সুযোগ নেই।

ওই ঘটনার ব্যাপারে চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুম রানা বলেন, আমরা সঠিক সময়ে গিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করেছি। দুই পক্ষের কথা শুনেছি। এখন তদন্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ও দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করব।

উল্লেখ্য, চুয়েটে ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও অভ্যন্তরে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক সক্রিয়তা চলমান বলে অভিযোগ করেন চুয়েট শিক্ষার্থীরা৷ তারা আরও মনে করেন, ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে আরও কঠোর না হলে এমন ঘটনা সামনে আরও ঘটতে পারে।