বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ১২:৫৮ এএম

ফিরে দেখা

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হতে শুরু করে ক্যাম্পাস

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ১২:৫৮ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

২৪-এর জুলাইয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়, ধীরে ধীরে তা স্বৈরাচার সরকার উৎখাতের ইতিহাস হয়ে ওঠে। দাবি ঘিরে মাঠে নেমে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সে দাবির বিপরীতে কপালে জোটে ক্ষমতাসীনদের পেটোয়া বাহিনীর বুলেট, লাঠিচার্জ। ২৪-এর ২ জুলাই আজকের এই দিনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে বিক্ষোভে উত্তাল হতে শুরু করে ক্যাম্পাসগুলো।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ এবং কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ২য় দিনে আন্দোলনে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীরা। ২ জুলাই দিনটি ছিল মঙ্গলবার। গণপদযাত্রা, মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হতে শুরু করে ক্যাম্পাসগুলো। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। ২ জুলাই ঢাবি থেকে গণপদযাত্রা এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকারের উচিত আমাদের দাবির চূড়ান্ত আইনি সমাধান ঘোষণা করা।’

তিনি বলেন, একই সাথে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিল অবস্থান কর্মসূচি: কর্মসূচির আগে গত বছর ২০২৪-এর ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ওই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছিলেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। অবশ্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান বলেছিলেন, নির্দেশনা সাপেক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

ঢাবি: পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২ জুলাই বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ঢাবির ভিসি চত্বর-নীলক্ষেত-ঢাকা কলেজ-সায়েন্সল্যাব হয়ে বেলা সাড়ে ৩টায় শাহবাগ মোড়ে পৌঁছায়। পরে সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ মোড় অবরোধ করে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হলে বিপাকে পড়েন সাধারণ জনগণ। সেদিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে মিছিলসহকারে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন অভিমুখে রওনা হন। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার খোলা রাখার দাবি তোলেন। পরে দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই ব্যানারে একই সময়ে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান আন্দোলনকারীরা।

জাবি: বিক্ষোভ-মিছিল শেষে আবারও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। ২৪-এর ২ জুলাই বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রায় ২৫ মিনিট অবরোধ করে রাখলে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম পরেরদিন পুনরায় বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন। তা ছাড়া আপিল বিভাগের রায়ে কোটা পদ্ধতি বাতিল না করা হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

জবি: বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে টানা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ইবি: বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালচত্বর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডায়না চত্বরের সামনে এসে ছাত্র সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় কোটাবৈষম্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা সেদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এ সময় দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে জনভোগান্তি হয়। এর আগে ববি গেটে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

পাল্টা কর্মসূচি ছিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদের: সাত দফা দাবিতে ২ জুলাই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংসদ কমান্ড। সেই দিন সকাল ১০টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ করে সংগঠনটি। এর পর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করে। তাদের দাবির মধ্যে ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণসহ দেশের সব চাকরির নিয়োগ ও সব পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে এ অধিকার দিতে হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরির অবসরের বয়স ৬১ বছর করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামলা, মামলা, নির্যাতন, জমি দখল বন্ধে পাস করতে হবে সুরক্ষা আইন। মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেণি-মর্যাদা নির্ধারণসহ তাদের সন্তানকে স্বল্প সুদে ঋণ, স্ত্রী-সন্তানদের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানের জন্য জাতীয় সংসদে ৫০টি আসন ও জেলা পরিষদসহ সব পরিষদ, গভর্নিং কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে দুজন করে সদস্য নীতিনির্ধারক ফোরামে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের মৃত্যুর পর ভাতার অংশ তার স্ত্রী অথবা সন্তান বা নাতি-নাতনিদের নামে চালু রাখতে হবে।

সেদিন সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান সোলায়মান মিয়া, মহাসচিব শফিকুল ইসলাম বাবু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম পাঠান, শামসুদ্দোহা প্রিন্স, এম টিপু সুলতান, জুয়েল মিয়াসহ বিভিন্ন জেলা, মহানগর ও থানা পর্যায়ের নেতারা।

Shera Lather
Link copied!