বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ১০:৩২ এএম

বেতন ঝুলছে এমপিওভুক্ত চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ১০:৩২ এএম

বেতন ঝুলছে এমপিওভুক্ত চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর

বেতন ঝুলছে চার লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর। ছবি: সংগৃহীত

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসনিক অদক্ষতার কারণে দেশের চার লাখেরও বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারী এপ্রিল মাসের বেতন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

জানা গেছে, কারো বেতন আটকে রয়েছে টানা দুই-চার মাস। আয় না থাকায় এ শিক্ষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম অর্থসংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিতভাবে বেতন না পাওয়ার ঘটনা ক্রমেই নিয়মে পরিণত হয়েছে, অথচ কর্তৃপক্ষের নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।

কবে তারা এই বেতন পাবেন তা-ও বলতে পারছে না মাউশি কর্তৃপক্ষ। অবস্থা এমন যে ঈদুল আজহার আগে এই শিক্ষকদের মে মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

মাউশি অধিদপ্তরের একাধিক পরিচালক ও উপপরিচালক সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষকরা কবে নাগাদ বেতন পেতে পারেন, তার জবাব দিতে পারেননি। মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান গতকাল বুধবার এ ব্যাপারে কোনো কথাই বলতে চাননি।

জানা গেছে, মাউশি অধিদপ্তরের এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল বেতন-ভাতা দেওয়ার বিষয়ে কাজ করে। সেলের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান এখন অসুস্থ। অন্য কেউ এই কাজের সঙ্গে যুক্তও নন। তিনি সুস্থ না হলে বেতনের বিল প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে না।

আগে শিক্ষকরা ড্যাশবোর্ডে তাদের নানা তথ্য দেখতে পেলেও এখন প্রায় পুরো পাতাই খালি। তাতে তারা বড় কোনো সংকটে পড়েছেন কি না- তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। যে সমস্যাই হোক মাউশির বর্তমান প্রশাসন তা কাউকে বুঝতে দিতে চাইছে না।

মাউশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ইএফটিতে শিক্ষকদের বেতন দিতে কয়েক দিন ধরে মাউশির ডিজি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। ইআইএমএস সেলের এক ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ এই কাজ করতে পারেন না বা অন্য কাউকে তৈরি করা হয়নি, তাই উদ্ভূত সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। মাউশি অধিদপ্তরে যেহেতু দক্ষ জনবল নেই, তাই তারা সরকারের অন্য কোনো দপ্তর বা আইটি বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে পারত। কারণ দেশে অনেক আইটি বিশেষজ্ঞ আছেন।

গত মার্চে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক ইএফটিতে বেতন ভাতা-পেয়েছেন। সেখান থেকে কেউ যদি অবসরে যান বা মৃত্যুবরণ করেন বা চাকরি ছাড়েন তাদের বেতন সফটওয়্যারে অটোমেটিক স্থগিত হয়ে যাওয়ার কথা। তাই বাকি শিক্ষকদের ডাটা ঠিক করতে না পারলেও ওই সাড়ে তিন লাখের এপ্রিলের বেতন যথাসময়ে পাওয়ার কথা। কিন্তু সেটাও তারা পাচ্ছেন না। অথচ সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা ঠিকই মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতন পেয়ে যাচ্ছেন।

জানা যায়, গত ১ জানুয়ারি এক লাখ ৮৯ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটির মাধ্যমে সরকারি অংশের বেতন-ভাতা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার, চতুর্থ ধাপে আট হাজার দুই শতাধিক ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন।

এ ছাড়া বহু শিক্ষক এখনো ইএফটিতে যুক্ত হতে পারেননি। মার্চ মাসের বেতন ঈদের আগে ব্যাংক খোলা রেখে দিতে হয়েছে। আবার তাদের এপ্রিলের বেতন আটকে গেছে। ছয় মাসেও ইএফটির জটিলতা নিরসন করতে পারেনি মাউশি অধিদপ্তর।

সূত্র জানায়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার প্রস্তাব মাউশি অধিদপ্তর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, চিফ অ্যাকাউন্টস অফিস হয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যায়। সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হতো।

এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো। ফলে ইএফটিতে বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ইএফটিতে বেতন দিতে গিয়ে এখন মহাসংকটে পড়েছে মাউশি অধিদপ্তর জনবল সংকটে। ইএফটি জটিলতায় বেতন না পাওয়া একাধিক শিক্ষক-কর্মচারী জানান, শিক্ষক-কর্মচারীর এনআইডি, এমপিও শিট, ব্যাংকের তথ্যের মিল রয়েছে, শুধু তারাই প্রথম ধাপে বেতন পেয়েছেন।

অনেক শিক্ষক-কর্মচারীর এনআইডি, এমপিও শিট, ব্যাংকের তথ্যের সামান্য ভুল, ডট, কমা, স্পেস, আক্ষরিক ভুলের কারণে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ধাপের শুধু ডিসেম্বর মাসের বেতন পেয়েছেন।

এ ছাড়া অনেকের জন্ম তারিখ, জন্ম সাল, নামের বানান ইত্যাদি শিক্ষা সনদের সঙ্গে অমিল আছে। তারা তা সংশোধনের জন্য জমা দিয়েছেন। আবার কেউ সংশোধন করে মাউশিতে আবেদন করেছেন। কিন্তু এ ধরনের হাজার হাজার শিক্ষকের বেতন কয়েক মাস ধরে হচ্ছে না।

ইআইএমএস সেলের প্রোগ্রামার-৫ মো. জহির উদ্দিন বলেন, ‘এখনো কাজ শেষ হয়নি। তবে শিগগিরই শেষ হবে।’

মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, ইএমআইএস সেলের কাজ শেষ হওয়ার পরও শিক্ষকদের বেতন পেতে অন্তত চার-পাঁচ দিন সময় লাগে। তাহলে যদি এই সপ্তাহে কাজ শেষ হয় তাহলে শিক্ষকরা আগামী সপ্তাহে বেতন পেতে পারেন। যদি এই সপ্তাহে শেষ না হয়, তাহলে এপ্রিলের বেতন মে মাসের শেষ সপ্তাহেও চলে যেতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!