রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে ২৬০ জন বাদ পড়লেও আইবিএ শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার নেই।
চূড়ান্ত তালিকায় ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৮৯২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১৫ হাজার ৩৫১ জন ও ছাত্রী ৯ হাজার ৭৪১ জন। মঙ্গলবার রাতে রাকসুর ওয়েবসাইট ও আবাসিক হলগুলোর নোটিশ বোর্ডে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
কোন হলে কত ভোটার
ছাত্র হল: শের-ই বাংলা ফজলুল হক ৮২৮, শাহ্ মখ্দুম ১১৭০, নবাব আব্দুল লতিফ ৯৬০, আমীর আলী ১১২৯, শহীদ শামসুজ্জোহা ১১৮৮, শহীদ হবিবুর রহমান ২০৮৮, মতিহার ১৫৮৩, মাদার বখ্শ ১৫৯০, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৫৬১, বিজয়-২৪ হলে ১২৮৩, শহীদ জিয়াউর রহমান হলে ১৯৭১।
ছাত্রী হল: মন্নুজান ২০৩৫, রোকেয়া ১৮২২, তাপসী রাবেয়া ১০৪৭, বেগম খালেদা জিয়া ১১৩৪, রহমতুন্নেসা ১৫৫৫, জুলাই-৩৬ হলে ২১৪৮।
ভোটাধিকার নেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের
জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা এবং ভোটাধিকারকে বাংলাদেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করায় তাদের এই প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাকসু নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীদের যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাই তাদের ভোটাধিকারও নেই। জাতীয় পর্যায়ে ভোট দেওয়ার অধিকার না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও তারা ভোট দিতে পারবে না।’
রাকসুর গঠনতন্ত্রে এ সংক্রান্ত কোনো আইন উল্লেখ আছে কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘যদিও বিষয়টি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্রে সরাসরি উল্লেখ নেই, কিন্তু ভোটাধিকার একটি নাগরিক অধিকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও এই একই নিয়ম অনুসরণ করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে।’
এর আগে, গত ৬ আগস্ট রাকসু নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ নিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে নেপালি শিক্ষার্থী সুমিত শর্মা বলেন, ‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আমাদের একজন প্রতিনিধি থাকা উচিত, যিনি বিদেশি শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের অনেকেই এ বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করে এবং আমার এই ভাবনার কারণে কেউ কেউ আমার প্রতি বিরূপ মনোভাবও দেখায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমি বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হইনি। এখন যেহেতু আমাদের ভোটাধিকার থাকছে না, তাই আর কিছু করার নেই। তবে আমাদের ভোটাধিকার থাকলে পছন্দের কোনো বাংলাদেশি প্রার্থীকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পেতাম।’
আচরণবিধি সংশোধন
এ ছাড়া, এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নির্বাচনের আচরণবিধির অনুচ্ছেদ-৫-এর ব্যাখ্যা ও সংশোধন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন ২০২৫-এর আচরণবিধির অনুচ্ছেদ-৫-এ বিদ্যমান শর্তের সংশোধনী নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
‘ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্র প্রবেশ সংক্রান্ত’ শিরোনামে যা বুঝানো হয়েছে তা হলো: নির্বাচনি প্রচারণার উদ্দেশ্যে প্রার্থীগণ (রাকসু ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি) সংশ্লিষ্ট আবাসিক হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার পূর্বানুমতি নিয়ে নির্ধারিত সময় ও স্থানে আবাসিক হলে শুধুমাত্র পরিচিতি সভায় ছাত্রদের আবাসিক হলে ছাত্রী প্রার্থী এবং ছাত্রীদের আবাসিক হলে ছাত্র প্রার্থী প্রবেশ করতে পারবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন