বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া ‘জুলাই ৩৬ স্মৃতিফলক’ এখনো ভিত্তিপ্রস্তরেই থমকে আছে। গত ২৮ মে স্মৃতিফলকটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও শুরু হয়নি নির্মাণকাজ। নির্ধারিত স্থানটি এখনো ফাঁকা, নেই কোনো নির্মাণ সামগ্রী বা প্রস্তুতির চিহ্ন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পর দেশজুড়ে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। ওই সময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় প্রথম স্মৃতিফলক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে পরদিন দেশজুড়ে ১৪৪ ধারা জারির কারণে নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে যায়।
পরবর্তীতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীরা স্মৃতিফলকটি পুনর্নির্মাণের দাবি জানায়। যদিও তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সময় (প্রায় ৮ মাস) কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করলে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ২৮ মে নতুন করে স্মৃতিফলকের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
স্মৃতিফলক নির্মাণ কমিটির আহ্বায়ক ড. আলমগীর মোল্লা জানান, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত হয়নি। পূর্বের উপাচার্য ইউজিসি থেকে বাজেট বরাদ্দের আশ্বাস দিলেও পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেননি। এমনকি ইউজিসিতে কোনো প্রতিবেদনও জমা দেননি বলে জানা গেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘নতুন উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রস্তাবিত ডিজাইনের কিছু সংশোধনের নির্দেশ দেন এবং একজন পেশাদার স্থপতির মাধ্যমে তা সংস্কারের পরামর্শ দেন। পুরোনো বাজেট বর্তমানে পর্যাপ্ত নয়, তাই নতুন ইস্টিমেট তৈরি করে ইউজিসিতে আবেদন করার কথা থাকলেও এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, ‘স্মৃতিফলক নির্মাণকাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্ধারণ করে একটি ইস্টিমেট প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে, যা ইউজিসিতে বরাদ্দ পাওয়ার আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত ডিজাইনের আশপাশের কিছু অংশে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে। পুরো প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন হলে আমরা ইউজিসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করবো। অনুমোদন পেলেই দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’