রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সক্রিয় সদস্য মীর তামান্না সিদ্দিকাকে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৩১ আগস্ট) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দেন। আবেদনপত্রে তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং অ্যাকাডেমিক ফলাফল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, চার মাস আগে সেশনজট সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র রেজিস্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দিলে তা ফাঁস হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার হাতে পৌঁছে যায়। এরপর থেকে তিনি অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি, ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির হুমকি দিয়ে আসছেন।
এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এপ্রিলে অভিযোগ করার পর সেটি ফাঁস হয়ে যায়। এরপর থেকে তামান্না ম্যাম আমাদের ওপর আরও চড়াও হন। আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
শিক্ষার্থীদের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষিকা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জনকে ৩.০০-এর নিচে গ্রেড দিয়েছেন এবং অনেককে ফেলও করিয়েছেন।
এদিকে অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে, মীর তামান্না সিদ্দিকা আর ওই ব্যাচের কোনো দায়িত্বে থাকবেন না। কিন্তু কিছুদিন পর আবারও তাকে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, মীর তামান্না সিদ্দিকা নীল দলের সক্রিয় কর্মী ছাড়াও অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও একমাত্র ছাত্রী হল ‘ফেলানী হল’-এর প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান জানান, ‘অভিযোগ ফাঁসের ঘটনার পর দায়ী কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আবেদনটি পর্যালোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’