ঢাকা সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জুলাইয়ে লাল প্রোফাইল নয়, কাচ ভাঙার ছবি দিয়ে প্রতিবাদ করেছিলাম: ফাহমিদা 

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে আলোচনায় এসেছেন প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম। গত বছরের ৩০ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার শেয়ার করা ভাঙা কাচের ছবি নিয়ে সমালোচনা ও বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে দাবি করেছেন, ছবিটি মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তবে ফাহমিদা নিজেই বিষয়টি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমার শেয়ার করা ছবিটি কোনোভাবেই সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত নয়। ছবিটি মেট্রোরেলেরও নয়। এটি গত বছরের মে মাসে চারুকলায় তোলা একটি ছবি। এর মধ্যে প্রকৃতির একটি রিফ্লেকশন ছিল। আমি শিল্পী হিসেবে ছবি তুলি, শিল্প ভালোবাসি। ভাঙা কাচ দিয়ে আমি হৃদয় ভাঙার প্রতীক দেখাতে চেয়েছি। তখন দেশে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছিল, সেই প্রেক্ষাপটেই ছবিটি যুক্তিযুক্ত ছিল। এটি ছিল আমার শিল্পীসুলভ প্রতিবাদ।

ফাহমিদা আরও বলেন, ছবিটি শেয়ার করার পেছনে তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না। বরং একজন শিক্ষার্থী ও শিল্পচর্চাকারী হিসেবে তিনি সমাজের অন্যায়, সহিংসতা ও মৃত্যু নিয়ে নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। তার দাবি, একটি ছবিকে ভুলভাবে ব্যবহার করে তাকে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রোফাইল লাল না করার প্রসঙ্গে ফাহমিদা বলেন, আমাকে বিরোধী ভেবে নেওয়া হয়েছে, যা একধরনের সোশ্যাল ফ্যাসিবাদ। প্রোফাইল লাল না করলে আন্দোলনের বিপক্ষে ধরে নেওয়া আসলে একধরনের মূর্খতা। এটি ফ্যাসিবাদের আরেক রূপ।

এ সময় ডাকসু নির্বাচনে রিট প্রসঙ্গেও বক্তব্য রাখেন তিনি। ফাহমিদার অভিযোগ, এস এম ফরহাদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পদে ছিলেন এবং এখনো তার পদত্যাগের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, সেই জায়গা থেকেই রিটটি করা হয়েছে। আমি শুধু প্রার্থিতার স্বচ্ছতা চাইছি।

এর আগে গত রোববার (৩১ আগস্ট) বামপন্থি সংগঠনগুলোর প্যানেল অপরাজেয় ৭১ ও অদম্য ২৪ এর প্রার্থী হিসেবে বি এম ফাহমিদা আলম, হাইকোর্টে ফরহাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করে রিট দাখিল করেন। বিচারপতি এস কে তাহসিন আলী ও হাবিবুল গণির বেঞ্চে এ রিট জমা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই ফাহমিদার গত বছরের জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই আন্দোলনে শত শত মানুষ নিহত হন এবং আহত হন অগণিত। সে সময় সরকার ৩০ জুলাইকে ‘রাষ্ট্রীয় শোক দিবস’ ঘোষণা করলেও আন্দোলনরত ছাত্ররা তা প্রত্যাখ্যান করে। অনলাইনে তারা লাল ব্যানার, প্রোফাইল ছবি ও প্রতিবাদী পোস্টের মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করে। কোটি মানুষ এদিন নিজেদের প্রোফাইল রাঙিয়ে তোলে বিপ্লবের লাল রঙে। কিন্তু ফাহমিদা সেদিন প্রোফাইল লাল করার বদলে ভাঙা কাচের ছবি শেয়ার করেন, যা পরবর্তীতে বিতর্কের জন্ম দেয়।