নব্বইয়ের দশকে কলকাতার বরেণ্য নির্মাতা বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছিল সিনেমা ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। সে সময় এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রূপালী পর্দায় অভিষেক হয় ঢাকার ফেরদৌস আহমেদ ও টালিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদীর।
এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছিলেন কলকাতার অন্যতম আবেদনময়ী চিত্রনায়িকা শ্রীলেখা মিত্র। সিনেমাটি সে সময় তুমুল আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই টেলিভিশনে প্রিমিয়ার হয়েছিল। পরে দর্শক আগ্রহে সেটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এ খবর কারোই অজানা নয়।
নতুন খবর হচ্ছে, দুই দশক আগে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমা করতে গিয়ে পরিচয় হয় ফেরদৌস ও শ্রীলেখার। শুটিংয়ে কাছাকাছি থেকে চেনাজানা, এক পর্যায়ে তাদের মন দেওয়া-নেওয়া হয়। চুটিয়ে চুপিসারে শুরু হয় তাদের প্রেম।
একই বছর ঢাকার ‘সিংহ পুরুষ’ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেন শ্রীলেখা। এই সিনেমার শুটিংয়ে এসে আরও কাছাকাছি আসেন ফেরদৌস ও শ্রীলেখা। পর্দার ফ্রেম ডিঙিয়ে কাটান একান্ত সময়। মূলত ফেরদৌসের কাছাকাছি আসার জন্যই সে সময় সিনেমাটিতে শ্রীলেখা যুক্ত হয়েছিলেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন। যদিও সিনেমাটিতে ফেরদৌস ছিলেন না। এতে শ্রীলেখার নায়ক ছিলেন ড্যানি সিডাক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য সূত্রটি বলেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টি করতে গিয়েই তাদের প্রেমের শুরু। এরপর ঢাকায় শুটিংয়ে এসে ফেরদৌসের সঙ্গে দারুণ সময় কাটান শ্রীলেখা। তবে সেই প্রেম বেশি দিন টেকেনি। কারণ, ফেরদৌস কিছুদিন পর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে একের পর এক সিনেমা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম হয়। দীর্ঘ সময় তারা প্রেম করেন। একটা সময় শ্রীলেখা-ফেরদৌসের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তখন ফেরদৌসকে ভুলে সহকারী পরিচালকের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শ্রীলেখা, যদিও তাদের বিয়েটা শেষ পর্যন্ত ভেঙে যায়।’
জানা গেছে, ঋতুপর্ণার কারণে ফেরদৌস-শ্রীলেখার প্রেম ভেঙেছিল, যদিও দুই বাংলার ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে জানে। কখনো তাদের প্রেমের বিষয় সামনে আসেনি। এমনকি শ্রীলেখার সঙ্গেও কখনো প্রেম নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি ফেরদৌস।
এদিকে ২০২৩ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে এসে আক্ষেপ করে শ্রীলেখা বলেছিলেন, ‘ফেরদৌসকে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ সিনেমাতে নেওয়ার জন্য পরিচালক বাসু চ্যাটার্জীকে আমিই সুপারিশ করেছিলাম। সেটা বোধ হয় ও (ফেরদৌস) কোথাও কোনো ইন্টারভিউতে বলেনি। আজ আমিই বলে দিলাম।’
বলা দরকার, গণঅভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। মাঝে খবর রটেছিল, ফেরদৌস ভারতে দীর্ঘদিনের বন্ধু ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর বাসায় আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে আছেন। এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই ঋতুপর্ণা জানান খবরটি সঠিক নয়। তিনি নায়কের খোঁজ জানেন না।