ঢাকা শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাত্রীযাপন ববি উপাচার্যের

আরিফুর রহমান, ববি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
গণঅনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাত্রিযাপন করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জমি অধিগ্রহণ ও শতভাগ পরিবহন নিশ্চিতকরণের দাবিতে গণঅনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাত্রিযাপন করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর)  রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন -১ এর নিচে অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে অবস্থান নেন তিনি।

অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জমি অধিগ্রহণ ও শতভাগ পরিবহন নিশ্চিতকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত নয়টা থেকে গণঅনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষার্থী। এর আগে তারা দুপুরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করলেও জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তা তুলে নিয়ে অনশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টানা ৩৭ দিন মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধ চালিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই উপাচার্যের অনুরোধে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করলেও ফের তারা অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছেন।

জানা যায়, তিন দফা দাবিতে গত ২৯ জুলাই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ১৪ আগস্ট থেকে ১ সপ্তাহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে দাবি পূরণের আশ্বাস না পেয়ে গত ২৪ আগস্ট থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত পরপর পাঁচ দিন বরিশাল–কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালান তারা।

একইসাথে, গত ২৭ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নির্মাণাধীন নভোথিয়েটার ভবন ও বিটাক ভবনে  একাডেমিক ও আবাসিক ভবনের ব্যানার টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলমের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেন। তবে আল্টিমেটাম শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা পুনরায় আন্দোলনে নামে। এরই ধারাবাহিকতায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর (বুধবার) শিক্ষার্থীরা ফের মহাসড়ক অবরোধ করেন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অমিয় মন্ডল বলেন, ‘তিন দফা দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সাড়া পাইনি। উপাচার্যের অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত করলেও তাতেও কোনো ফল আসেনি। তাই যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি।’

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিলা জাহান সেঁজুতি বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ তিন দফা দাবিতে আমরা টানা আন্দোলন চালিয়ে এসেছি। মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, এমনকি মহাসড়ক অবরোধ করেও কোনো আশ্বাস পাইনি। জনদুর্ভোগ এড়াতে অবরোধ তুলে নিয়ে আমরা আমরণ অনশনের পথ বেছে নিয়েছি। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ থেকে অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন-ইংরেজি বিভাগের শারমিলা জামান সেঁজুতি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অমিয় মন্ডল, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের তাজুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের মো. আবুবকর সিদ্দিক, দর্শন বিভাগের পিয়াল হাসান, লোকপ্রশাসন বিভাগের আহমেদ রিয়াজ, আইন বিভাগের শওকত ওসমান।

এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও অনশনে অংশগ্রহণ করছেন।