জামায়াতে ইসলামী থেকে যারা ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সাংসদ হবেন, তারা ‘করমুক্ত গাড়ি’ কিংবা ‘সরকারি প্লটের’ সুবিধা নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা করমুক্ত গাড়ি কিংবা কম দামে সরকারি প্লট নেবেন না। তেলের মাথায় তেল দেব না, সব পরিষেবায় বঞ্চিতরা অগ্রাধিকার পাবে।’ গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা-১০ আসনের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘একটি ইনসাফের দেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী একা পারবে না; সে জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সে জন্য বলব, অতীত ভুলে আগামীতে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে পাঁচ বছরে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে। ভয়-শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে জনগণকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকার আহ্বান জানাই।’ কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ফ্রি এই মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। বাইপাস সার্জারির কারণে দেড় মাস বিশ্রামে থাকার পর এই প্রথম জামায়াতের আমিরকে জনসম্মুখে দেখা গেল। গত ২ আগস্ট গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে শফিকুর রহমানের হৃদযন্ত্রে বাইপাস সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ, যাদের বিদেশে যাওয়ার সক্ষমতা নেই, তারা দেশের চিকিৎসায় ভরসা রাখেন। সাধারণ মানুষ যেখানে বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারে না, সেখানে আমি কীভাবে বিদেশে যাই? দেশের চিকিৎসার প্রতি সব সময় আস্থা ছিল। সেই চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা ফেরাতে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে দেশেই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদেরা দেশের মানুষের জন্য কথা বলেন। সেই মানুষদের দেশে ফেলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমার বাংলাদেশে চিকিৎসা নেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল, যারা হাঁচি-কাশি দিলেই বিদেশে যা, সেটির প্রতিবাদ করা। আপনি সোনার বাংলা গড়তে চাইবেন, কিন্তু জনগণকে রেখে বিদেশে চিকিৎসা নেবেন, সেটি সমর্থন করি না।’
রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, ‘রাজনীতিক বন্ধুদের বলব, চিকিৎসা বাংলাদেশেই আছে, সেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন না। সোনার বাংলার গল্প শোনাবেন অথচ আপনাদের কিছু হলে বিদেশে দৌড়াবেন। রাজনীতিবিদেরা দেশে চিকিৎসা নিলে চিকিৎসাব্যবস্থার ত্রুটিগুলো পূরণ হয়ে যেত।’