ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জাকসুর নেতৃত্বে আসছে জিতু-মাজহার?

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
আব্দুর রশিদ জিতু ও মো. মাজহারুল ইসলাম। ছবি- সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ৪২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তবে এরই মধ্যে হল সংসদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সংসদের ১৯টি কেন্দ্রের ফল গণনা শেষ হয়েছে। প্রাথমিক ফলে দেখা যাচ্ছে, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রশিবির মনোনীত মো. মাজহারুল ইসলাম এগিয়ে রয়েছেন। ফলে জাকসুর নেতৃত্বে এই দুজনই আসছেন কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।

আব্দুর রশিদ জিতু বর্তমানে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে নেতৃত্বের সামর্থ্য দেখান এবং সেখান থেকে পদত্যাগ করে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ গড়ে তোলেন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তিনি ক্যাম্পাসের নানা কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

অন্যদিকে, মো. মাজহারুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অফিস ও প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। এসএসসি পাস করেছেন নোয়াখালী জেলা স্কুল থেকে এবং এইচএসসি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, ঢাকা থেকে।

এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ৯ জন, জিএস পদে ৮ জন এবং যুগ্ম সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৬ জন।

তবে নির্বাচন ঘিরে বিতর্ক ও বর্জনের ছায়াও ছিল। ভোটগ্রহণ শুরুর পর কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। বর্জনকারীদের মধ্যে রয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ‘অঙ্গীকার পরিষদ’। এ ছাড়াও ছাত্রফ্রন্টের একটি বিভক্ত অংশ এবং কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও পরে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়। হলভিত্তিক ছাত্রদের ভোটার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে- আল বেরুনী হল ২১০ জন, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল ৩৩৩ জন, মীর মশাররফ হোসেন হল ৪৬৪ জন, শহীদ সালাম-বরকত হল ২৯৮ জন, মওলানা ভাসানী হল ৫১৪ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হল ৬৫০ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ৩৫০ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হল ৭৩৫ জন, জাতীয় কবি নজরুল হল ৯৯২ জন এবং তাজউদ্দীন আহমদ হল ৯৪৭ জন।

নির্বাচনের ফল ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কে হচ্ছেন নতুন জাকসুর নেতৃত্ব- জিতু না মাজহার, সেটাই এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।