বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি, যা বিনামূল্যে পাঠ্যবইসহ বিভিন্ন মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠন। অবশেষে 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সিন্ডিকেটের' নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরকারের হস্তক্ষেপে সমিতির সভাপতির পদ থেকে রব্বানী জব্বারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তার নেতৃত্বাধীন কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত করে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে।
রোববার (১৩ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (বাণিজ্য সংগঠন-২ শাখা) বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নবনিযুক্ত প্রশাসককে আগামী ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রব্বানী জব্বার আওয়ামী লীগের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের ছোট ভাই।
তিনি বিনা ভোটে নেত্রকোনার কালিয়াজুরী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলেও তিনি মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি হিসেবে স্বপদে বহাল ছিলেন, যা মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছিল।
অভিযোগ রয়েছে, সমিতির শীর্ষ কিছু ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় তিনি সমিতিতে উপস্থিত না থাকলেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সমিতির সভাপতি হিসেবে অংশ নিতেন।
এমনকি গত সপ্তাহেও তিনি এনসিটিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শুধু তাই নয়, গত বছর ১ কোটি ৪৭ লাখ বই ছাপার কাজ তিনিই পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রশাসক নিয়োগের আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন। সমিতির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত করে প্রশাসক নিয়োগের আবেদন পাওয়া গেছে।
এছাড়াও বর্তমান কমিটি কারণ দর্শানোর যথাযথ জবাব উপস্থাপন করতে পারেনি এবং বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
সমিতির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ব্যর্থতা, বিলুপ্তির আবেদন, কারণ দর্শানোর জবাব দিতে না পারা এবং বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭ ধারা মোতাবেক এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।