ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫

মাগুরা-২ আসনে বিএনপির নিতাই রায় ও কাজী কামাল, জামায়াতের বাকের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৫, ১০:৩৭ এএম
নিতাই রায়, কাজী কামাল ও রবিউল ইসলাম নয়ন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মাগুরা-২ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে জমে উঠেছে বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতি এবং আলোচনার মাঠ। শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলা এবং সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটিকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে ধরা হলেও এবার পাল্টেছে চিত্র। সামনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির আলোচিত তিন ও জামায়াতের একজন প্রার্থী এখনই মাঠে সক্রিয়।

স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৯ বার জয়লাভ করলেও, ২০০১ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয় পায় বিএনপি। ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন, যিনি বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।

এ আসন থেকে সর্বাধিক পাঁচবার এমপি হয়েছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার। তবে এবার তিনি কিংবা আওয়ামী লীগ কেউই মাঠে নেই।

অন্যদিকে, বিএনপির সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ইতোমধ্যেই বৃহৎ জনসভা করেছেন মহম্মদপুর ও শালিখায়। ওয়ান-ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেল খেটেছেন তিনি। নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মসূচির পাশাপাশি তিনি দলের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সক্রিয়।

কাজী কামাল বলেন, ‘দল যদি মনোনয়ন দেয়, আবারও মানুষের সেবা করতে চাই।’

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় আছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। তিনি বিগত সরকারের সময় পুলিশের নির্যাতনের শিকার এবং দীর্ঘদিন মাঠে সক্রিয় থেকে আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘দলীয় কর্মীদের পাশে থাকাদের প্রাধান্য দেওয়া হলে মানুষ উপকৃত হবে। মনোনয়ন পেলে শতভাগ চেষ্টা করব।’

এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে জেলা আমির এমবি বাকেরের নামে। জামায়াতের স্থানীয় শক্ত ভোটব্যাংকের কারণেই তার গুরুত্ব বাড়ছে। তিনি নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ করছেন।

এ ছাড়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দল থেকে জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামালকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৮ সালের আলোচিত ‘রাতের ভোটের’ পর মানুষ নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারালেও বিএনপি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা এ আসনে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা উৎসাহ ফিরিয়ে আনছে।

বিশ্লেষকরা আরও মনে করেন, ১৯৯৪ সালের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শফিকুজ্জামান বাচ্চুর বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হন বিএনপির কাজী সালিমুল হক কামাল। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে জয় পেয়ে এ আসনে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সড়ক উন্নয়নসহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমে ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হন।

অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামালকে এ আসনে প্রার্থী হিসাবে চূড়ান্ত করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং নতুন নিবন্ধন পাওয়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি।