দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেছেন দেশবরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে দেশবরেণ্য এ শিল্পীর মরদেহ । পরে কুষ্টিয়ায় মা-বাবার কবরে তাকে দাফন করা হবে।
হাসপাতাল থেকে গণমাধ্যমের সামনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী প্রখ্যাত বংশীবাদক ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম।
ওস্তাদ গাজী আব্দুল হাকিম সাংবাদিকদের জানান, সকালে প্রথমে ‘অচিন পাখি’ নামে গানের স্কুলে শিল্পীকে নেওয়া হবে। এরপর সকাল ৯টায় তেজকুনি পাড়া মসজিদে শিল্পীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, শিল্পী, কলাকুশলীসহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শিল্পীর মরদেহ সকাল সাড়ে ১০টায় নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় শিল্পীর মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে।
সেখানে আরেকটি জানাজা হবে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে কুষ্টিয়া। সেখানকার পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরে দাফন করা হবে ফরিদা পারভীনকে।
উল্লেখ্য, লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে ফরিদা পারভীনের পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়।
ক্যারিয়ারের শুরুতে দেশাত্মবোধক গান গাইলেও ফরিদা পারভীনের পরিচয় গড়ে ওঠে লালনকন্যা হিসেবে। জীবনের বেশির ভাগ সময় তার কেটেছে লালন সাঁইয়ের গান গেয়ে। তার কণ্ঠে ‘মিলন হবে কত দিনে, ‘অচিন পাখি’ গানগুলো আজও বাঙালির চেতনার অংশ হয়ে আছে।
সংগীতে অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে একুশে পদক পেয়েছেন ফরিদা। জাপান সরকার তাকে কুফুওয়া এশিয়ান কালচারাল পদক দিয়েছে। ফরিদা পারভীন কেবল নিজের গান করেননি; বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লালনের গান শিখিয়েছেন। তার উদ্যোগে তোলা হয় অচিন পাখি স্কুল, যেখানে শিশুদের শেখানো হয় আধ্যাত্মিক শক্তির মর্ম ও গান।