সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৫:০৫ এএম

‘সেদিন থেকেই আমি বুঝলাম, লালন আমার পথ’

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৫:০৫ এএম

আসরে লালন  সংগীত গাইছেন ফরিদা পারভীন। ছবি- সংগৃহীত

আসরে লালন সংগীত গাইছেন ফরিদা পারভীন। ছবি- সংগৃহীত

বাংলা সংগীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, লালন গানের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেওয়া কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন। গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ১০টায় রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে ফরিদার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুল সংগীত গাওয়া শুরু করেন ফরিদা পারভীন। এরপর ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তবে তার সঙ্গীত জীবনের সবচেয়ে বড় বাঁক আসে ১৯৭০-এর দশকের গোড়ায় কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় একটি দোল পূর্ণিমার অনুষ্ঠানে, যেখানে গুরু মোকছেদ সাঁইয়ের আমন্ত্রণে মঞ্চে প্রথম পা রাখেন তিনি। ‘সত্য বল সুপথে চল’ লালন গানের সুরে গাইতে গাইতে তার জীবনে প্রবল আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটে।

ফরিদা পারভীন নিজেই বলতেন, ‘সেদিন থেকেই আমি বুঝলাম, লালনই আমার পথ।’ এরপর থেকে তিনি লালন গানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মনিবেদিত হন এবং গানের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক সুধা ছড়িয়ে দিতে থাকেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে থেকে লালন সংগীতের তালিম নিয়ে তিনি এই ধারাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে কাজ করেছেন।

শুধু গায়কী নয়, লালন সংগীতের সংরক্ষণ ও প্রসারে তার অবদান অমূল্য। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি সংগীত একাডেমি’ এবং ‘অচিন পাখি স্কুল’, যেখানে শিশু ও নতুন প্রজন্মকে লালন গানের প্রকৃত মর্ম ও ভাবনা শেখানো হতো।

বয়স ও দীর্ঘ সময়ের পরও তিনি একুশে পদকে সম্মানিত হয়েছিলেন (১৯৮৭)। এছাড়া অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা রয়েছে তার সংগ্রহে। ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে সম্মানিত হন তিনি। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন ফরিদা পারভীন।

বয়স বৃদ্ধির সত্ত্বেও তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন নতুন প্রজন্মের লালন চর্চার সম্পর্কে। তিনি বলতেন, ‘নতুন প্রজন্ম শুদ্ধভাবে লালন চর্চা করছে না এবং আধুনিক উপস্থাপনা সঠিক নয়।’

তার মতে, লালন গানের আসল সার্থকতা হৃদয়ের গভীর উপলব্ধি ছাড়া সম্ভব নয়।

ব্যক্তিগত জীবনের নানা পরীক্ষায়ও সঙ্গীতকে কখনো ছাড়েননি ফরিদা পারভীন। প্রতিটি গানকে নিজের সন্তানরূপে ভাবতেন এবং বলতেন, ‘আমি কী পাঁচ ছেলেকে আলাদা করে পছন্দ করতে পারি? আমার গাওয়া প্রতিটি গান আমার হৃদয়ের অংশ।’

বাংলার সংগীত ইতিহাসে ফরিদা পারভীনের অবদান চিরকাল অমর হয়ে থাকবে। তিনি বলেছেন, ‘লালনের গানের রাজ্যে সম্রাজ্ঞী হওয়া যায় না, তবে আত্মার গভীরতা থেকে অনুধাবন করলেই সাঁইজির বাণী হৃদয়ে জাগ্রত হয়।’

Link copied!