অভিনেত্রী পরীমণি হাসপাতালে ভর্তি। ভয়ংকর এক মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ফেসবুকে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘প্যানিক অ্যাটাক মোটেই কোনো সহজ বিষয় নয়! এটা যে কতটা ভয়ংকর হতে পারে! আজ তিনটা রাত কীভাবে পার করেছি আমি শুধু জানি।’
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিশুদের মৃত্যু ও আগুনে পোড়া হৃদয়বিদারক সব ছবি ও ভিডিও দেখার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পরীমণি।
চিকিৎসকদের ভাষ্য, বিষয়টি ট্রিগার করেছে তার ভেতরের গভীর কোনো ট্রমা। সোমবার বিকেল থেকে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করতে থাকেন তিনি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে নিজের সন্তানকে পাশে বসিয়ে রাখা এক ভিডিও গতকাল রাতে শেয়ার করেন অভিনেত্রী। রাজ্য মায়ের কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু মাঝেমধ্যেই কেঁদে উঠছে সে।
মাকে এভাবে কষ্ট পেতে দেখে ছোট্ট ছেলেটি যেন নিজেই ডাক্তার সেজে স্টেথোস্কোপ কানে নিয়ে মায়ের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ব্যস্ত।
পরীমণি লিখেছেন, ‘হসপিটালের ডাক্তাররা (মেডিসিন, কার্ডিওলজি এবং সাইকোলজি বিশেষজ্ঞ) সবাই তাদের যথার্থ সাহায্য করে যাচ্ছেন। আমি শুধু ভাবছি, আমার বাচ্চারা না থাকলে কোনো চিকিৎসা কি আদৌও কাজে আসত আমার এই মুহূর্তে! আমি জানি না… আমি শুধু জানি, আমার বাচ্চারা আমাকে ছাড়া ভালো থাকবে না। আল্লাহ মহান, সবার সহায় হোক।’
এই পরিস্থিতিতে অভিনেত্রী এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। এখনও মাঝেমধ্যে প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার দুপুরে তার বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয় টেস্ট করা হয়। ফলাফল হাতে পাওয়ার পরই পরবর্তী চিকিৎসা নির্ধারণ করা হবে।
পরীমণির ঘনিষ্ঠদের ভাষ্য, প্যানিক অ্যাটাকের মাত্রা এতটাই ছিল যে প্রথম রাতগুলোতে তার নিঃশ্বাস আটকে আসছিল, বুকে ছিল প্রবল চাপ, অশ্রু ছিল অবিরাম।
সন্তানের প্রতি মমতা আর বাঁচার আকুতি মিলিয়ে এই মা যেন লড়াই করছেন এক অসম যুদ্ধ। সামাজিক মাধ্যমে তার কথাগুলো যেন শুধু একজন অভিনেত্রীর নয়, একজন মায়ের বুকভাঙা আর্তি।
এদিকে চলতি মাসের শেষে ‘গোলাপ’ নামের একটি ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল পরীমণির। স্ক্রিপ্ট রিডিং সেশনেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তবে ছবির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কারিগরি জটিলতার কারণে এই মাসে শুটিং সম্ভব নয়।
এই সময় পরীমণির প্রতি শুভকামনা জানাচ্ছেন ভক্ত ও সহকর্মীরা। সবাই চাইছেন, অবিলম্বে সেরে উঠুন এই প্রিয় অভিনেত্রী, ফিরে আসুন ক্যামেরার আলোয়, আবারও যেন হাসিতে ভরে ওঠে রাজ্যর মা’র মুখ।