শোবিজ তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন যেন এক খোলা বই, যেটা যে কেউ পড়ে নিজের মতো ব্যাখ্যা দিতে পারেন। সম্প্রতি কিছু 'অতিরিক্ত চিন্তিত' নেটিজেনের উদ্দেশে এক দীর্ঘ বার্তায় নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিনেত্রী পরীমণি। বললেন, ‘আমার মেয়ে কোনো বিজনেস এলিমেন্ট না। এই সিম্পল কথাটা মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলেন আরামছে।’
একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে পরীমণি লেখেন, ‘খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের সবার জীবনের আনাচে কানাচে অতি উৎসাহী লোকদের অভাব নেই। তাদের জীবনের সমস্ত অভাব পূরণ হয় অন্যের জীবন নিয়ে চর্চা করে। মনে রাখবেন, আমরা যারা শোবিজ অঙ্গনে কাজ করি তাদেরও ব্যক্তিগত জীবন খুব সাদামাটা, সাধারণ সবার মতোই। আমার তো একদমই তাই।’
নিজের দৈনন্দিন জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি লেখেন, ‘ঘরের মধ্যে আমি চুলে একগাদা তেল মেখে আরাম করে ঘরের কাজ করতে থাকি। বাড়িতে বাচ্চাদের খাবার আমি রান্না করি (শারিরীক অসুস্থতা বা শুটিং এ না থাকলে)। বাচ্চাদের যাবতীয় কাজ আমি নিজের হাতেই করি।’
এরপরেই মূল ক্ষোভ উগরে দেন পরীমণি। জানান, কিছুদিন ধরে খেয়াল করছেন কিছু অবাঞ্ছিত মানুষ তার মেয়ে নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন। তাদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘রীতিমত পোস্ট করছে আমাকে ট্যাগ করে, কমেন্ট করছে আমার পোস্টে যে, ‘’আপনার দত্তক মেয়েকে তো দেখি না আর। কই সেই দত্তক মেয়ে!’ এরকম নানান ধরনের কথা আর কি। ভাই, প্রথমত মেয়ে টা আমার মেয়ে। কথায় কথায় দত্তক দত্তক বলে এদের কি মজা লাগে আমি সত্যিই বুঝি না।’
পরীমণি আরও লেখেন, ‘আমার মেয়ের ছবি/ ভিডিও দিলেই কিছু মাথামোটা লোকজন কন্টেন্ট পেয়ে যায় ব্যাস। দত্তক শব্দটা দিয়ে একটা ক্যাপশন দেয় আর ভিউ ব্যবসা শুরু করে। আমার মেয়ে কোনো বিজনেস এলিমেন্ট না এটা একদম ভালো মতো বুঝে নেন এখন থেকে।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্তানের উপস্থিতি নিয়ে কারও মন্তব্য তিনি একেবারেই মেনে নিতে নারাজ। নিজের ভাষায় বলেন, ‘আমার ইচ্ছে হলে আমি আমার বাচ্চাদের ছবি দিবো, ইচ্ছে না হলে দিবো না। এই কমেন্টে কমেন্টে আমার বাচ্চাদের খুঁজবেন না আর। আমি আমার বাচ্চাদের খালে ফালায়ে দিছি হিহিহি… খুশি?’
সবশেষে বন্ধু দিবসে শুভেচ্ছাও জানাতে ভোলেননি পরীমণি। লেখেন, ‘হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে। আমার সমস্ত শুভাকাঙ্ক্ষী, অনুসারীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
অভিনেত্রী পরীমণির এই স্পষ্ট ও সাহসী বার্তা আরও একবার প্রমাণ করে, মাতৃত্ব হোক দত্তক বা জন্মসূত্রে-ভালোবাসা, দায়িত্ব আর মর্যাদার জায়গায় তার কোনো তফাৎ নেই। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ‘কনটেন্ট খোর’ দের প্রতি এই বার্তা হয়তো অনেক প্রশ্নের আগেই জবাব হয়ে থাকবে।