রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০১:০৫ পিএম

‘নতুন কুঁড়ি’র ফল প্রকাশ, বিজয়ী প্রেয়সী ও শুভমিতা

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০১:০৫ পিএম

দুই বিজয়ী- শুভমিতা তালুকদার ও প্রেয়সী চক্রবর্তী।  ছবি - সংগৃহীত

দুই বিজয়ী- শুভমিতা তালুকদার ও প্রেয়সী চক্রবর্তী। ছবি - সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘নতুন কুঁড়ি-২০২৫’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৫ নভেম্বর) তথ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সারা দেশের হাজারো শিশু এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। নাচ, গান, আবৃত্তি, কৌতুক, গল্প বলা, অভিনয়সহ মোট ১২টি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পর্ব শেষে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্ব।

গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা নিজ কার্যালয়ে ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের সেরা দুই বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এদিন ‘ক’ গ্রুপে টাঙ্গাইল জেলার প্রেয়সী চক্রবর্তী এবং ‘খ’ গ্রুপে সুনামগঞ্জ জেলার শুভমিতা তালুকদারের নাম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারা প্রত্যেকে একটি ক্রেস্ট ও তিন লাখ টাকার চেক গ্রহণ করে।

গতকাল রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) অডিটোরিয়ামে ‘নতুন কুঁড়ি-২০২৫’ প্রতিযোগিতার সব বিভাগের বিজয়ী শিশু-কিশোরদের পুরস্কার প্রদান করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। পুরস্কার বিতরণকালে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিজয়ী শিশুশিল্পীরা পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করবে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম শিশু-কিশোরদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে নতুন কুঁড়ির শিশুশিল্পীদের সংস্কৃতিচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকেরা শিশুশিল্পীদের প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’

প্রতিযোগিতার ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগের মোট ৭৩ জন শিশুশিল্পী ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে পুরস্কৃত হয়েছেন। প্রথম স্থান অর্জনকারীকে ২ লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থানকে ১ লাখ টাকা এবং তৃতীয় স্থানকে ৫০ হাজার টাকার চেকসহ ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়।

ক বিভাগ

অভিনয়ে ১ম আরহাম হাসান আরিয়ান; ২য় রুফাইদা আফরা; ৩য় মুগ্ধতা মল্লিক। আধুনিক গানে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় স্মিতা বাড়ই; ৩য় শেখ রোদসী রায়ান। আবৃত্তিতে ১ম আরিশা দানীন মাহা; ২য় মোঃ ইছা আল মাহিম; ৩য় নাভীদ হাসান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মোছাঃ আদৃতা তাসনিম লাবণ্য; ২য় শৌনক কুন্ডু; ৩য় আর্যশ্রী বিশ্বাস পৃথা। কৌতুকে ১ম সাবিক সাদত; ২য় জেরাল্ড বিশ্বাস; ৩য় মাহিরা। গল্পবলায় ১ম রোহিনী হাসান হৃদ্ধি; ২য় আয়েশা সিদ্দিকা; ৩য় নুসরাত তাসনিম। 

দেশাত্মবোধক গানে ১ম অংকিতা সরকার; ২য় মো. ইহানুর রহমান; ৩য় তোজো মণ্ডল। নজরুলসংগীতে ১ম অরিত্রা বসাক; ২য় শ্রেয়া রায়; ৩য় অংকিতা সরকার। রবীন্দ্রসংগীতে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় আরিশা দানীন মাহা; ৩য় শুভশ্রী সরকার। লোকসংগীতে ১ম চিশতি রহমতুল্লাহ সাফীন মন্ডল; ২য় আইয়ান রেজা; ৩য় মো. ইহানুর রহমান। সাধারণ নৃত্যে ১ম ঐশ্বর্য্য জিতা স্পর্শ; ২য় নাজিফা হোসেন (স্বাধিকা); ৩য় দীপশিখা দে। হামদ-নাতে ১ম সুরাইয়া আক্তার; ২য় তাসবিহা আয়ান তানহা; ৩য় শুহাদা।

খ বিভাগ

অভিনয়ে ১ম হুমায়রা আসিফা; ২য় মাহিমা জামান কথা; ৩য় মুরাদুস সালিহীন। আধুনিক গানে ১ম রোদসী নূর সিদ্দিকী; ২য় তুষ্মি দাস; ৩য় শ্রীতমা রায়। আবৃত্তিতে ১ম সাবিলা সুলতান বাণী; ২য় আফিয়া সাইয়ারা ত্বাহা; ৩য় নাহিনা বিনতে জামান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মৃনময়া পাল ও তুলি মল্লিক (যৌথভাবে); ২য় তনুশ্রী মন্ডল; ৩য় কায়নাত বিনতে মোর্শেদ রাই। কৌতুকে ১ম দিশান রায় দুর্জয়; ২য় এহসানুল হক; ৩য় তাসফিয়া মুনতাহা। গল্পবলায় ১ম ফাইরুজ বারী মালিহা; ২য় সমহৃদ্ধি সূচনা স্বর্গ; ৩য় মাহিমা জামান কথা। দেশাত্মবোধক গানে ১ম শ্রেয়া সাহা; ২য় শ্রদ্ধা কর্মকার; ৩য় অন্বেষা বর্মন। নজরুলসংগীতে ১ম আজমাইন আরহাম; ২য় শুভমিতা তালুকদার; ৩য় অন্বেষা বর্মন। রবীন্দ্রসংগীতে ১ম শুভমিতা তালুকদার; ২য় শ্রীতমা রায়; ৩য় অন্বেষা বর্মন। 

লোকসংগীতে ১ম কুমারী রিয়া ব্যাধ; ২য় মোঃ বাইজিদ আহমেদ; ৩য় তানিশা ইসলাম হিয়া। সাধারণ নৃত্যে ১ম রাওজা করিম রোজা; ২য় রাধিকা তাছাল্লুম রিয়ন্তি; ৩য় ইউশা শাহিরা আনুভা। হামদ-নাতে ১ম আহনাফ আদিল; ২য় তাসনিম জাহান; ৩য় রোদসী নূর সিদ্দিকী।

দুই বিজয়ীর গল্প

প্রেয়সী চক্রবর্তী

প্রেয়সী চক্রবর্তী টাঙ্গাইল সদরের আকুরটাকুর পাড়ায় থাকেন। তার পরিবারে মা-বাবা সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত। মা, রাখি চক্রবর্তী, স্কুলশিক্ষক, আর বাবা, পল্লব চক্রবর্তী, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে কর্মরত। বড় বোন শ্রেয়সী চক্রবর্তীকেও গান করতে দেখা যায়; বর্তমানে তিনি ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে শাস্ত্রীয় সংগীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন। প্রেয়সীর সংগীতপ্রেমের প্রথম শিক্ষা পেয়েছেন বাবা-মায়ের কাছ থেকে।

‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতায় প্রেয়সী আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম স্থান এবং নজরুলসংগীতে সেরা দশে স্থান করে ‘ক’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তখন তিনি শাহীন প্রি-ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। পরিবারের বাইরে তিনি ড. অসিত রায়ের সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘ষড়জ পঞ্চম রাগসংগীত একাডেমি’তে তালিম নিচ্ছেন।

বিজয়ী প্রেয়সীর হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। ছবি- সংগৃহীত

প্রেয়সীর বাবা, পল্লব চক্রবর্তী বলেছেন, ‘নতুন কুঁড়ি’র খবর শুনে ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘মা, তুমি কি প্রতিযোগিতায় যাবে?’ ও সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলল। তার অডিশন ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হয়। তার ইচ্ছা ছিল, তাই আমরা তাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর সবাই ওর গায়কি পছন্দ করতে শুরু করে। আস্তে আস্তে অন্য বিচারকরাও তার প্রতি আগ্রহী হলেন। এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে ওর মা। প্রতিযোগিতা চলাকালীন আমার বড় মেয়ে দেশে থাকায় ছোট মেয়ে সাহস পেয়েছে।’

প্রেয়সীর লক্ষ্য হলো সংগীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা। সে জানিয়েছে, ‘সব ধরনের গানের চর্চা চালিয়ে যাব। ভবিষ্যতে কোনো ধরনের গান নিয়মিত গাইব, তা আমার চর্চা ঠিক করে দেবে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’

শুভমিতা তালুকদার

সুনামগঞ্জের শুভমিতা তালুকদার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার সংগীত যাত্রা শুরু হয়েছে মায়ের কাছ থেকে। বাসায় তালিমের পাশাপাশি তিনি তিন বছর ধরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক সন্তোষ কুমার চন্দরের কাছে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, দেশাত্মবোধক গান, আধুনিক গান ও উচ্চাঙ্গসংগীতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এছাড়া গীতবিতান বাংলাদেশের অধ্যক্ষ অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর কাছে আলাদা করে দুই বছর রবীন্দ্রসংগীতে তালিম নিয়েছেন।

জাতীয় পর্যায়ে দুইবার পুরস্কৃত হয়েছেন শুভমিতা- ২০২২ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কারে উচ্চাঙ্গসংগীতে এবং ২০২৪ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে রবীন্দ্রসংগীতে দ্বিতীয় পুরস্কার। ‘নতুন কুঁড়ি’তে তিনি রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম, নজরুলসংগীতে দ্বিতীয় এবং দেশাত্মবোধক গানে পঞ্চম হয়ে ‘খ’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।

বিজয়ী শুভমিতার হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। ছবি- সংগৃহীত

শুভমিতা সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে অডিশন দেন দুর্গাপূজার ষষ্ঠীতে। তার বাবা, দ্বীপন কুমার তালুকদার, জানিয়েছেন, ‘প্রতিযোগিতার জন্য আমাদের বেশ কিছুদিন ঢাকায় থাকতে হয়েছে। শুভমিতার খালা–খালুর আন্তরিক সাপোর্ট না থাকলে এতটা সাফল্য সম্ভব হতো না।’

শুভমিতা নিজেও জানিয়েছেন, ‘কোনো না কোনো বিভাগে ভালো করব, এমন প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা ভাবিনি। সব ধরনের গানই গাইব। বড় হয়ে হয়তো একধরনের গান বেছে নেব।’

শুভমিতার প্রিয় শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, ফেরদৌস আরা ও প্রিয়াংকা গোপ। তার মা, শান্তনা সরকার, সুনামগঞ্জ সদরের ইয়াকুব উল্লাহ পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান পড়ান। বাবা দ্বীপন কুমার তালুকদার পাইগাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। বাবার পরিবারের কেউ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সক্রিয় না হলেও, মা সংগীতচর্চা করতেন এবং নানার পরিবারের অনেকেই সংস্কৃতিমনা।

Link copied!