ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

রান্নাঘরের গুপ্তধন জোয়ান, জেনে নিন উপকারিতা

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৫, ০৬:৪৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের প্রায় প্রতিটি রান্নাঘরেই যে মশলাটি অবধারিতভাবে থাকে, তা হলো জোয়ান। দেখতে ছোট হলেও জোয়ানের স্বাস্থ্য উপকারিতা একেবারেই ছোট নয়।

হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে পেটের নানা সমস্যা থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি, এমনকি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও।

জোয়ানের উপকারিতা

১. প্রাকৃতিক হজমশক্তি বাড়ায়

জোয়ানকে বলা হয় প্রাকৃতিক হজমশক্তি বর্ধক। এতে থাকা সক্রিয় উপাদান থায়মল পাচনতন্ত্রে এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে, যা খাবার হজমে সাহায্য করে।

যারা গ্যাস্ট্রিক, অম্বল বা পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য জোয়ান ভেজানো পানি বা কাঁচা জোয়ান চিবানো হতে পারে সহজ ও প্রাকৃতিক সমাধান। এটি অন্ত্রের মাংসপেশি শিথিল করে, ফলে গ্যাস বের হয়ে যায় সহজে।

২. সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে উপকারী

জোয়ানে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। ঠান্ডাজনিত সমস্যা যেমন সর্দি, কাশি কিংবা ব্রঙ্কাইটিসে এটি উপশম আনে। গরম পানিতে জোয়ান সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ভাপ নিলে নাক বন্ধ ভাব দূর হয় এবং শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়।

৩. ওজন কমাতে সহায়ক

জোয়ান বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে, যার ফলে চর্বি পোড়ার হার বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে জোয়ান ভেজানো পানি পান করলে ধীরে ধীরে ওজন হ্রাস পেতে সাহায্য করে।

৫. ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা প্রশমনে উপকারী

নারীদের জন্য জোয়ান অত্যন্ত উপকারী, বিশেষ করে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের সময় পেটব্যথা নিরসনে। এটি জরায়ুর মাংসপেশিকে শিথিল করে এবং ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।

ঋতুস্রাবের কয়েকদিন আগে থেকে জোয়ান চা বা ভেজানো পানি খেলে উপকার মেলে।

৬. মাথাব্যথা ও ক্লান্তিতে প্রশান্তি আনে

জোয়ানের সুগন্ধ মস্তিষ্কের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং টেনশন, ক্লান্তি ও মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। জোয়ানের তেল দিয়ে মাথায় মালিশ করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।

কীভাবে জোয়ান ব্যবহার করবেন?

জোয়ানের উপকারিতা পেতে হলে এটিকে সঠিকভাবে গ্রহণ করাও জরুরি। জনপ্রিয় কিছু ব্যবহারের উপায় নিচে দেওয়া হলো:

  • জোয়ান ভেজানো পানি: এক চামচ জোয়ান এক গ্লাস পানিতে রাতভর ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করুন।
  • জোয়ান চা: ফুটন্ত পানিতে জোয়ান দিয়ে ৫ মিনিট ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করুন।
  • খাবারে মশলা হিসেবে: পরোটা, তরকারি বা ডালের মধ্যে ছিটিয়ে দিন।
  • জোয়ান ও মধু মিশিয়ে: ঠান্ডা লাগলে সামান্য জোয়ান গুঁড়া ও মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

সতর্কতা

যদিও জোয়ান স্বাভাবিকভাবে নিরাপদ, তবে অতিরিক্ত খেলে অম্বল বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে। গর্ভবতী নারীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করবেন।