ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ছেলেদের বিয়ের সঠিক বয়স

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ০২:৫৩ পিএম
বাংলাদেশের আইন অনুসারে, একজন ছেলের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের ‘সঠিক বয়স’ বলতে কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা বোঝানো হয় না। কারো জন্য ২৪ বছরেই উপযুক্ত সময় হতে পারে, আবার কেউ ৩০ বছরেও মানসিকভাবে প্রস্তুত না-ও থাকতে পারে। এটি একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত যা নিজস্ব বাস্তবতা ও প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে।

আমাদের দেশ ও সমাজে বিয়ের বয়স নিয়ে নানা ধরনের মতপার্থক্য রয়েছে। তবে একজন ছেলের বিয়ের ‘সঠিক বয়স’ বলতে আসলে কী বোঝায়?

এটি নির্ভর করে একাধিক বিষয়ের ওপর- শারীরিক পরিপক্বতা, মানসিক প্রস্তুতি, আর্থিক সক্ষমতা, এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট। 


আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স

বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন অনুসারে, একজন ছেলের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। এর আগে বিয়ে করা আইনত অপরাধ এবং তা শাস্তিযোগ্য।

শারীরিক ও মানসিক পরিপক্বতা

শারীরিকভাবে ছেলেরা সাধারণত ১৮–২১ বছরের মধ্যে পরিপক্বতা অর্জন করে। তবে মানসিক পরিপক্বতা অর্জন করতে অনেক সময় লাগে। 

একজন ছেলে যদি দায়িত্ব নিতে শেখে, সংকট মোকাবিলা করতে পারে, এবং সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে, তবেই সে বিবাহিত জীবনের জন্য উপযুক্ত হয়।

আর্থিক স্থিতি

বিয়ে মানে শুধু একজন নারীকে ঘরে আনা নয়, বরং একটি নতুন পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া। এই কারণে আর্থিক স্থিতি একটি বড় বিষয়। 

চাকরি, আয়, এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা- এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। সাধারণভাবে দেখা যায়, ২৫–৩০ বছরের মধ্যে ছেলেরা কর্মজীবনে স্থিতি পেতে শুরু করে, যা বিয়ের জন্য আদর্শ সময় হতে পারে।

সামাজিক ও পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গি

অনেক পরিবারে ছেলেদের ওপর দ্রুত বিয়ে করার চাপ থাকে, আবার অনেক সময় দেরিতে বিয়ের সিদ্ধান্তেও পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এখানে ব্যালান্স রক্ষা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো পারিবারিক আলোচনা ও নিজের মতামত প্রকাশ করাটা একজন ছেলের দায়িত্ব।

ছেলেদের সঠিক বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা

পরিবার গঠনের উপযুক্ত সময়: একজন পুরুষ মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুত থাকলে একটি সুস্থ ও স্থায়ী পারিবারিক জীবন গঠন করা সহজ হয়।
দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা: বয়স ও অভিজ্ঞতা বাড়ার ফলে জীবনসঙ্গী ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালনে সচেতনতা বাড়ে।
সন্তান লালনপালনের জন্য উপযুক্ত সময়: সঠিক বয়সে বিয়ে করলে সন্তানদের দেখাশোনা ও গাইড করার সময় এবং শক্তি থাকে।
পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো হয়: মানসিক পরিপক্বতা থাকায় দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া বা ভুল বোঝাবুঝি কম হয়।
সামাজিক স্থিতি ও সম্মান: বিয়ের মাধ্যমে একজন পুরুষ সামাজিকভাবে স্থিতিশীল ও পরিণত মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন।

অপ্রস্তুত অবস্থায় বা ভুল সময়ে বিয়ের অপকারিতা

আর্থিক চাপ: প্রস্তুতি ছাড়াই বিয়ে করলে চাকরি, আয় ও খরচ নিয়ে চাপ তৈরি হয় যা দাম্পত্য জীবনে অশান্তি আনে।
দাম্পত্য কলহ: মানসিক পরিপক্বতা না থাকলে ছোটখাটো বিষয়েও দাম্পত্য কলহ তৈরি হয়।
জীবনের লক্ষ্য ব্যাহত হতে পারে: উচ্চশিক্ষা, ক্যারিয়ার বা ব্যক্তিগত উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা: অল্প বয়সে বিয়ে করলে অনেকে দায়িত্ব এড়াতে চায় বা দাম্পত্য জীবনকে বোঝা মনে করে।
সন্তানদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব: অস্থির ও অপ্রস্তুত পরিবারে বড় হওয়া সন্তানদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

ছেলেদের বিয়ের সঠিক বয়স নির্ধারণে কোনো একক সূত্র নেই। তবে আইন, মানসিক পরিপক্বতা, আর্থিক সক্ষমতা ও পারিবারিক অবস্থার ভিত্তিতে ২৫–৩০ বছরকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটি উপযুক্ত পরিসীমা হিসেবে ধরা যায়। 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- বিয়ে যেন একটি সচেতন, দায়িত্বশীল এবং পরিণত সিদ্ধান্ত হয়। সঠিক বয়সে বিয়ে করলে যেমন জীবনে স্থিরতা আসে, তেমনি ভুল সময়ে বিয়ে করলে সেটি হতে পারে জীবনের এক বড় চ্যালেঞ্জ।

ছেলেদের বিয়ের সঠিক বয়স নির্ধারণে কোনো একক সূত্র নেই। তবে আইন, মানসিক পরিপক্বতা, আর্থিক সক্ষমতা, ও পারিবারিক অবস্থার ভিত্তিতে ২৫–৩০ বছরকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটি উপযুক্ত পরিসীমা হিসেবে ধরা যায়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- বিয়ে যেন একটি সচেতন, দায়িত্বশীল এবং পরিণত সিদ্ধান্ত হয়।