সারারাত উপবাসের পর সকালে শরীর ও মস্তিষ্কের প্রয়োজন হয় শক্তি আর পুষ্টির জোগান। ঠিক তখনই সকালের খাবার কাজ করে ‘ফুয়েল’ হিসেবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সকালে খাবার খায়, তারা শুধু বেশি মনোযোগী ও কর্মক্ষমই নয়, বরং তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি কম থাকে। অন্যদিকে, সকালের খাবার খাওয়া বাদ দিলে সারাদিনের শক্তি, মনোযোগ ও মেটাবলিজমে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
মেটাবলিজম বাড়ায়
প্রোটিন থার্মোজেনেসিস নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপাক বাড়ায়। যার ফলে শরীর খাবার হজম এবং বিপাক করার শক্তি ব্যবহার করে। প্রোটিন প্রক্রিয়াকরণের সময় শরীর অনেক ক্যালোরি ব্যবহার করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ সকালের নাস্তা তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
এটি ক্ষুধা হ্রাস করে এবং তৃপ্তি বাড়ায়
সকালের নাস্তায় প্রোটিন খাওয়ার বড় সুবিধা হলো এটি অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেটে থাকে। কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে প্রোটিন হজম হতে বেশি সময় লাগে। ফলে জাঙ্ক ফুড বা অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার প্রবণতা কমে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
প্রোটিন সমৃদ্ধ সকালের নাস্তা রক্তে শর্করাকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি খুব কম প্রোটিনযুক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করেন, তবে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং তারপরে হঠাৎ হ্রাস পায়। এতে হুট করে অবসাদ লাগার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
সুস্থ পেশী বজায় রাখে
প্রোটিন পেশী তৈরি এবং মেরামত করতে সহায়তা করে। প্রাতঃরাশের জন্য প্রোটিন গ্রহণ বিশেষ করে যারা ব্যায়াম করেন সকালে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দিনের শুরুতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে পেশী মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়া যায়।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে সুষম প্রাতঃরাশ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কারণ প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিডের মতো পদার্থ থাকে, যা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে
যদি প্রতিটি সকালের নাস্তায় প্রোটিন যোগ করা হয়, তাহলে সময়ের সাথে সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রোটিন অনেকক্ষণ পর্যন্ত ক্ষুধা লাগতে দেয় না। রক্তে শর্করার স্থিতিশীলতা এবং বিপাক হার বৃদ্ধির কারণে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা সম্ভব হয়।
সকালের নাস্তায় যেভাবে রাখতে পারেন প্রোটিন
- ডিম সেদ্ধ, স্ক্র্যাম্বল বা অমলেট খেতে পারেন সকালের নাস্তায়। মানসম্পন্ন প্রোটিনের দারুণ উৎস ডিম।
- প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই খেতে পারেন বাদামের সঙ্গে।
- প্রোটিন ভালো উৎস পনির। নাস্তায় রাখতে পারেন এটি।
- চিয়া বীজের প্রোটিন বানিয়ে খেতে পারেন সঙ্গে রাখুন তাজা ফল।
মন ভালো রাখে
সকালের নাশতা না খেলে পেটে ক্ষুধা থাকে আর পেটের ক্ষুধা আমাদের মস্তিষ্ককেও উত্তেজিত করে ফেলে। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, কাজে মন বসে না। তাছাড়া সকালের নাশতা মস্তিষ্কের সুখি হরমোন সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। এটি ঘুম ও ক্ষুধার ভারসাম্য ঠিক রাখে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া