আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পানি পানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। কিন্তু শুধু পানি নয়, গরম বা কুসুম গরম পানি খাওয়ার আলাদা উপকারিতাও রয়েছে। প্রাচীন আয়ুর্বেদ থেকে শুরু করে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রেও গরম পানি পান করার স্বাস্থ্য গুণের কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে কিংবা রাতে ঘুমানোর আগে গরম পানি খেলে দেহের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য বজায় থাকে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে।
গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা-
হজম শক্তি বৃদ্ধি
গরম পানি পেটের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে সক্রিয় করে, ফলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়। এটি পাকস্থলীতে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে।
দেহের টক্সিন দূরীকরণ
গরম পানি নিয়মিত পান করলে ঘাম ও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের টক্সিন বা বর্জ্য পদার্থ সহজে বেরিয়ে যায়। এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতায় সহায়ক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গরম পানি সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা ইত্যাদির বিরুদ্ধে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার রাখতেও এটি কার্যকর।
মেদ ঝরাতে সহায়ক
সকালে খালি পেটে গরম পানি পান করলে বিপাকক্রিয়া (মেটাবলিজম) বাড়ে। এতে শরীরের বাড়তি মেদ সহজে ঝরতে পারে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
গরম পানি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যার ফলে ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। এতে ত্বক সতেজ ও দীপ্তিময় হয়।
পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা কমায়
গরম পানি পানের ফলে পাকস্থলীতে জমে থাকা গ্যাস ও বাতাস সহজেই বেরিয়ে যায়। পেটের অস্বস্তি দূর হয়।
মানসিক প্রশান্তি দেয়
গরম পানি খেলে স্নায়ু শিথিল হয়, মানসিক চাপ কমে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।
কখন খাবেন:
১/ সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি খাওয়া।
২/ খাবারের আগে গরম পানি খেলে হজমপ্রক্রিয়া ভালো হয় এবং অতিরিক্ত খাওয়া রোধ হয়।
৩/ ভারী খাবার বা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর।
৪/ রাতে ঘুমানোর আগে।
৫/ সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথা।
সতর্কতা:
১/ খুব বেশি গরম পানি খাওয়া ঠিক নয়; এতে মুখ, গলা ও পাকস্থলী পুড়ে যেতে পারে। কুসুম গরম পানি পান করাই নিরাপদ।
২/ যারা গ্যাস্ট্রিক বা পাকস্থলীর সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
আপনার মতামত লিখুন :