ফ্যাটি লিভার- একটি নীরব বিপদ, যেটি প্রায় কোনো উপসর্গ ছাড়াই শরীরকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. পালানিয়াপ্পন মানিক্কাম সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জানান, কীভাবে ফ্যাটি লিভার শরীরের ক্ষতি করে এবং কীভাবে সহজ কিছু অভ্যাস বদলে এই ক্ষতি প্রতিরোধ বা প্রতিকার সম্ভব।
ড. পাল লিখেছেন, ‘ফ্যাটি লিভার ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। তবে একসময় তা ইনফ্লেমেশন, দাগ (ফাইব্রোসিস), এমনকি সিরোসিসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে বিষাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে, পেটের চর্বির দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং একটি সুস্থ জীবনধারা বেছে নিতে হবে।’
তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘যখন শরীর অতিরিক্ত চর্বি জমাতে পারে না, তখন তা জমা হয় লিভার, প্যানক্রিয়াস এবং পেটের ভেতরে। ফলে যদি দেখেন আপনার কোমরের মাপ বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার লিভারে ইতোমধ্যেই চর্বি জমা শুরু হয়ে গেছে— এমনকি যদি আপনি কোনো অসুস্থতা না অনুভব করেন।’
লক্ষণহীন কিন্তু ক্ষতিকর
প্রথমদিকে ফ্যাটি লিভার কোনো ব্যথা বা উপসর্গ সৃষ্টি করে না। তবে ১০-২০ বছর ধরে এটি ইনফ্লেমেশন তৈরি করে, যা লিভার কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দাগ সৃষ্টি করে। ধীরে ধীরে এই দাগ লিভারের আকার ছোট করে ফেলে এবং কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
ড. পাল বলেন, লিভার অনেকাংশে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম। কিন্তু যদি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়, তাহলে সেই ক্ষমতা কমে যায় এবং সিরোসিসের দিকে ধাবিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে ভাবেন শুধু অ্যালকোহল লিভার ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু এখনকার সময়ে সবচেয়ে বড় শত্রু হলো ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ’, যা খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং বসে থাকার জীবনধারার কারণে হয়।’
কী কী আপনার লিভারের জন্য বিপজ্জনক? ড. পালের মতে, নিচের বিষয়গুলো লিভারের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর-
চিনি মেশানো পানীয় (সোডা, মিষ্টি চা, জুস)
ভাজাপোড়া খাবার (সামোসা, চিপস, পাকোড়া)
শরীরচর্চাহীন জীবনধারা
ঘুমের সমস্যা ও দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ
এইগুলো লিভারে বিষাক্ত উপাদান ও ফাঁকা ক্যালরি জমা করে এবং ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় বলে জানান ড. পাল। তিনি পরামর্শ দেন, এই খাবারগুলো বাদ দিয়ে ব্ল্যাক কফি বা চা এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি সবজি যেমন বেরি, ব্রোকলি ও বিট খেতে হবে। এই খাবারগুলো লিভারের ক্ষতি রোধ করে এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
আপনার মতামত লিখুন :