বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তি হতে না পারলেও মনোবল হারাননি তিনি। ডিগ্রি পাস কোর্সে ভর্তি হয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন। সেই কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাসের ফলেই প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন রাজশাহীর শেখ তৌহিদুল কবীর। এখন তিনি হয়ে উঠেছেন অনেক তরুণের প্রেরণার উৎস।
রাজশাহী নগরীর শেখ রেজাউল করিম ও নাজমিনা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান তৌহিদুল। ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে রাজশাহী কলেজে ডিগ্রি পাস কোর্সে ভর্তি হন। শুরুতে অনেকেই তার পথ নিয়ে নানা কটাক্ষ করলেও তিনি ভেতরে ভেতরে লালন করে গেছেন এক অদম্য স্বপ্ন— ‘দেখিয়ে দেবো, আমি পারি।'
ডিগ্রি পাস শেষে রাজশাহী কলেজ থেকেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। ২০১৮ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স পাস করার পর শুরু করেন সরকারি চাকরির প্রস্তুতি। ২০২০ সালে প্রথম চাকরি পান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে। পরে ২০২২ সালে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অডিটর পদে যোগ দেন।
তবে তার লক্ষ্য ছিল বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে অধ্যবসায় চালিয়ে যান এবং প্রথমবার অংশ নিয়েই প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
সেই মাহেন্দ্রক্ষণের কথা স্মরণ করে তৌহিদুল বলেন, ‘ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার খবর শুনে প্রথমে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।’
বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া তরুণ-তরুণীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিসিএস কেবল মেধার পরীক্ষা নয়, এটি ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং মনঃসংযোগের পরীক্ষা। যিনি নিয়মিত পরিশ্রম করবেন, পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন, তিনিই সফল হবেন। বিশ্বাস রাখতে হবে— আমিও পারব। ব্যর্থতা আসবেই, কিন্তু তাতে ভেঙে পড়লে চলবে না।’
শেখ তৌহিদুল কবীরের গল্প প্রমাণ করে— পথ যত কঠিনই হোক, লক্ষ্য স্থির থাকলে ও কঠোর পরিশ্রম করলে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব।