প্রতিদিনের সূর্যোদয়ের সাথে শুরু হয় নতুন এক দিন, আর সেই দিনের প্রথম শক্তির জোগান আসে সকালের নাস্তা থেকে। রাতে ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমের পর শরীরে শক্তির ভাণ্ডার ফাঁকা হয়ে যায়। এই সময় সঠিক খাবার খেলে মস্তিষ্ক সজাগ হয়, শরীর পায় কর্মশক্তি, আর মন থাকে প্রফুল্ল।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সকালের নাস্তা খান তারা সারাদিন বেশি মনোযোগী, সক্রিয় এবং মানসিকভাবে স্থিতিশীল থাকেন। তাই সকালের নাস্তা কেবল একটি খাবার নয়—এটি সুস্থতা ও কর্মক্ষমতার ভিত্তি।
জেনে নিন সকালের নাস্তায় যেসব খাবার খাবেন-
ডিম
ডিমকে বলা হয় “পারফেক্ট প্রোটিন” কারণ এতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। সকালের নাস্তায় সেদ্ধ, পোচ বা অমলেট- যেভাবেই খান না কেন, ডিম আপনার শরীরকে প্রোটিন, ভিটামিন ডি, বি১২, এবং সেলেনিয়াম সরবরাহ করবে। এগুলো হাড় মজবুত রাখতে, রক্ত তৈরি করতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ওটস
ওটস ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। দুধ, মধু, ফল বা বাদাম মিশিয়ে ওটস খেলে এটি হয়ে ওঠে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সুষম নাস্তা।
চিড়া
চিড়া সহজপাচ্য এবং হালকা, তবে পুষ্টিগুণে ভরপুর। কলা, দুধ বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে সকালের জন্য এটি হতে পারে চমৎকার বিকল্প।
হোল-গ্রেইন রুটি বা ব্রাউন ব্রেড
পরিশোধিত আটা দিয়ে তৈরি সাদা রুটি এড়িয়ে চলুন। এর বদলে আঁশসমৃদ্ধ গম বা অন্যান্য হোল-গ্রেইন রুটি বেছে নিন। এটি ধীরে হজম হয়, ফলে দীর্ঘসময় শক্তি দেয়।
ফলমূলের প্রাকৃতিক পুষ্টি
সকালে ফল খাওয়া হজমশক্তি ভালো রাখে এবং শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। আপেল, কলা, কমলা, পেঁপে, আঙুর বা মৌসুমি ফল শরীরের জন্য ভিটামিন, মিনারেল ও প্রাকৃতিক চিনি দেয়, যা মস্তিষ্ক ও পেশিকে সক্রিয় করে।
দুধ
দুধ ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন ডি-র অন্যতম উৎস, যা হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে।
দই
প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ দই পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এবং হজমে সহায়তা করে। সকালের নাস্তায় ফল বা মধুর সাথে দই খাওয়া যেতে পারে।
বীজজাতীয় খাবার
কাঠবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম, চিয়া সিড ও ফ্ল্যাক্স সিডে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার। এগুলো দীর্ঘসময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
সকালের নাস্তা যেন হয় পুষ্টি, স্বাদ ও বৈচিত্র্যে ভরপুর। এতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট, ভালো চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের সুষম সমন্বয় থাকতে হবে। মনে রাখবেন, দিনের শুরুটা কেমন হবে, তার সিদ্ধান্ত অনেকটাই নির্ভর করে আপনার নাস্তায়।
তাই সময়ের অভাব বা অলসতার কারণে নাস্তা বাদ দেবেন না বরং একটু পরিকল্পনা করে পুষ্টিকর খাবার দিয়ে দিন শুরু করুন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন