শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ১১:৫৫ এএম

দেশজুড়ে ঘন ঘন ভূমিকম্প, যেকোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ১১:৫৫ এএম

রাজধানীতে ভূমিকম্প। ছবি - সংগৃহীত

রাজধানীতে ভূমিকম্প। ছবি - সংগৃহীত

গত কয়েক বছর ধরে দেশে ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ঘন ঘন হালকা কম্পন মূলত বড় শক্তির জমা হওয়ার প্রাথমিক ইঙ্গিত, আর বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ১৫০ বছরের ভূকম্পন চক্রের এমন এক পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে যেকোনো সময় রিখটার স্কেলে ৮.২ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটতে পারে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৫ মাসে দেশে ২১টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, এর মধ্যে ৩টির মাত্রা ছিল ৫-এর ওপরে। সর্বশেষ নরসিংদী এলাকায় উৎপত্তিস্থল হওয়া ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প রাজধানীসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এর আগে ২০২৩ সালের ৫ মে ঢাকার খুব কাছেই দোহার উপজেলায় ৪.৩ মাত্রার কম্পন ঘটে। এছাড়া লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জকে কেন্দ্র করে হওয়া আরেকটি কম্পনে একাধিক ভবনে ফাটল ধরে এবং আতঙ্কে ভবন থেকে নামতে গিয়ে শতাধিক পোশাকশ্রমিক আহত হন।

ভূতত্ত্ববিদদের মতে, বাংলাদেশ অবস্থান করছে দুটি সক্রিয় টেকটনিক প্লেট- ভারতীয় প্লেট ও মিয়ানমার প্লেটের সংযোগস্থলে। এই প্লেট সংঘর্ষই ঘন ঘন ভূমিকম্পের প্রধান কারণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার সাহা জানান, দেশে প্রধানত দুই ধরনের ভূমিকম্প দেখা যায়- একটি টেকটনিক প্লেটের কারণে, অন্যটি বিভিন্ন ফল্টলাইনে সৃষ্ট অস্থিরতার কারণে। মধুপুর ফল্টলাইন ছাড়াও বুড়িগঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর আশপাশে নতুন নতুন উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত হচ্ছে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার সতর্ক করে বলেন, ইন্ডিয়া ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে জমে থাকা শক্তি একসঙ্গে মুক্ত হলে ৮.২ মাত্রার বড় ভূমিকম্প ঘটতে পারে।

আজকের ভূমিকম্প নিয়ে তিনি আরও বলেন, ইউরোপিয়ান সিসমোলোজিক্যাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। ভূমিকম্পটিতে যে তীব্র, যে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে, তা তার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ভূমিকম্পের ঝুঁকির দিক থেকে সবচেয়ে বিপদে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, নির্মাণবিধি লঙ্ঘন, দুর্বল ভূমি এবং অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের কারণে শহরটি ভয়াবহ ধ্বংসের ঝুঁকিতে রয়েছে। নগর-পরিকল্পনাবিদ আকতার মাহমুদ জানান, ঢাকার বহু বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে ইমারত নীতিমালা ও ভূমির ধরন উপেক্ষা করে। বিশেষত বালু বা ভরাট নরম মাটিতে নির্মিত ভবনগুলোর ঝুঁকি সর্বোচ্চ, আর লাল মাটি বা শক্ত মাটিতে নির্মিত ভবন তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্প কোনো আগাম বার্তা দেয় না। তাই ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে এখনই সতর্কতা ও প্রস্তুতি বৃদ্ধি করতে হবে। রাজধানীর ভবনগুলো পুনরায় পরীক্ষা করে ত্রুটিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলার দায়িত্ব নিতে হবে রাজউককে। পাশাপাশি ভবন নির্মাণে জাতীয় নীতিমালা কঠোরভাবে মানার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি।

Link copied!