একটা সময় ছিল ফাইন্যান্সিয়াল সমস্যা মেটাতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের কাজকে বেছে নিতে বাধ্য হতো। যেখানে সামান্য বেতনের আশায় খাটতে হতো একটা দীর্ঘ সময়। ফলে কাঙ্ক্ষিত একাডেমিক ফল না পাওয়ার পাশাপাশি গ্রাজুয়েশনের পর চাকরির বাজারেও তারা পিছিয়ে পড়ত। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এখন সে-ই সময়টার পরিবর্তন এসেছে। উন্মোচন ঘটছে নতুন নতুন পেশার। যার মধ্যে একটি অন্যতম আধুনিক পেশা কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ। পড়াশোনাকে ঠিক রেখে ভালো একটা উপার্জনের পথ হিসেবে এই পেশাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তেমনই একজন শিক্ষার্থীর গল্প। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল-ই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী, নাজমুল হাসান শান্ত। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি জড়িত আছেন কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভের সঙ্গে। প্রাপ্ত উপার্জন থেকে পড়াশোনার খরচ বহন করেও করছেন পরিবারকে সহায়তা। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে তিনি বলেন,
আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। মা-বাবা বুকভরা আশা এবং স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনা করতে দিয়েছেন। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে নানা রকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। যেখানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। এই একটা কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়তে দেখেছি। আবার কেউ কেউ পার্টটাইম চাকরি করতে গিয়ে পড়াশোনা কন্টিনিউ করতে পারেনি। এসব নিয়ে কিছুটা ভয়েই ছিলাম। কিন্তু সে ভয় কাটিয়ে উঠি এডমিশন টেস্টের পর। ভার্সিটির বড় ভাইদের সহায়তায় কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ পেশার সঙ্গে যুক্ত হই। এখন অভিজ্ঞতা থেকে এইটুকু বলতে পারি, কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও সম্ভাবনাময় পেশা। পার্টটাইম জবের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর আশা থাকে যেন কোনো রকমভাবে পড়াশোনায় প্রভাব না পড়ে। কিন্তু বাস্তবতা দাঁড়ায় পুরোপুরি ভিন্ন। কারণ জব এবং পড়াশোনা দুইটা দুই জিনিস! একসঙ্গে করতে গেলে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং একটা ভালো সমাধান হলেও এখানে প্রচুর সময়ের ব্যাপার। তাই আমি মনে করি কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ একটা দারুণ সমাধান। এই জব পড়াশোনার ক্ষতি না করে বরং উন্নতি করতে সাহায্য করে। এই ধরনের কাজের পরিবেশ সাধারণত ডাইনামিক। এই সেক্টরের কর্মকর্তারা টিমে কাজ করেন, যেখানে ডিজাইন, মার্কেটিং এবং অন্যান্য বিভাগগুলো একসঙ্গে কাজ করে। এতে শেখার কিংবা জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এখানে সময়ের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণ পড়াশোনা করে এই সেক্টরে জব করা সম্ভব। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো একটা আয়ের উৎস হতে পারে কন্টেন্ট এক্সিকিউটিভ। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের পাশাপাশি তাদের লেখা এবং গবেষণা ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে এটি সাহায্য করে। তাই আমি মনে করি পড়াশোনার পাশাপাশি কোনো জব করতে চাইলে শিক্ষার্থী এ সেক্টরে করতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :