সহজলভ্য ও সস্তা হলেও রয়েছে নানা বিতর্ক ব্রয়লার মুরগি নিয়ে যা জানা জরুরি।বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের গ্রাম হোক বা শহর, বাজারে সবচেয়ে সহজলভ্য ও সস্তা মাংসের উৎস হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। দ্রুত বড় হওয়া এবং সহজে উৎপাদনের কারণে এটি খাদ্যতালিকায় ব্যাপকভাবে জায়গা করে নিয়েছে। তবে এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা নিয়েও ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। তাই ব্রয়লার মুরগি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা খুব জরুরি।
ব্রয়লার মুরগির উপকারিতা
সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী খাবার
ব্রয়লার মুরগি তুলনামূলকভাবে কম দামে বাজারে পাওয়া যায়, যা সাধারণ মানুষ সহজে ক্রয় করতে পারে।
প্রোটিনের ভালো উৎস
ব্রয়লার মুরগিতে প্রচুর প্রোটিন থাকে, যা শরীরের পেশি গঠন, শক্তি বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
দ্রুত রান্না করা যায়
ব্রয়লার মুরগির মাংস তুলনামূলকভাবে নরম হওয়ায় সহজেই রান্না করা যায় এবং কম সময়ে প্রস্তুত হয়।
বিভিন্ন পদে ব্যবহারযোগ্য
ব্রয়লার মুরগির মাংস দিয়ে ভুনা, ফ্রাই, স্যুপ, কাবাবসহ নানা পদ তৈরি করা যায়, যা খেতে সুস্বাদু এবং বৈচিত্র্যময়।
শরীরের জন্য হালকা খাবার
গরু বা খাসির মাংসের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির মাংস হালকা এবং সহজে হজম হয়।
ব্রয়লার মুরগির অপকারিতা
ক্ষতিকর হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ঝুঁকি
অনেক ক্ষেত্রে ব্রয়লার মুরগিকে দ্রুত বড় করতে হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর আশঙ্কা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত এসব রাসায়নিকযুক্ত ব্রয়লার মাংস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে পারে।
হরমোন জনিত সমস্যার আশঙ্কা
বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্রয়লার মাংস খেলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন।
অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়ায়
ব্রয়লার মুরগিতে ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক উপাদান অনেকের শরীরে অ্যালার্জি বা ত্বকের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
স্বাদ ও পুষ্টিমানে ঘাটতি
দেশি মুরগির তুলনায় ব্রয়লার মুরগির স্বাদ এবং কিছু পুষ্টিমূল্য কম বলে ধরা হয়।
সতর্কতা ও করণীয়
ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত, যাতে জীবাণু ধ্বংস হয়।
পরিচিত ও বিশ্বস্ত উৎস থেকে ব্রয়লার মুরগি কেনা নিরাপদ।
প্রতিদিন বা অতিরিক্ত ব্রয়লার মাংস খাওয়া ঠিক নয়, মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে।
শিশুর খাদ্যতালিকায় সতর্কতার সঙ্গে ব্রয়লার মাংস দিতে হবে।
ব্রয়লার মুরগি আমাদের খাদ্য তালিকায় একটি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী উৎস হলেও এর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা যায় না। সঠিকভাবে খাওয়া, ভালো উৎস থেকে সংগ্রহ করা এবং পরিমিত ব্যবহারের মাধ্যমে এর উপকার পাওয়া সম্ভব। তবে একান্তই স্বাস্থ্য সচেতন হলে দেশি মুরগি বা বিকল্প প্রোটিন উৎস বেছে নেওয়াই অধিক নিরাপদ।