রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪, ১২:২১ পিএম

বন্যায় জীববৈচিত্র্যের হুমকি

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৪, ১২:২১ পিএম

বন্যায় জীববৈচিত্র্যের হুমকি

ছবি সূত্র : ওয়ান গ্রীন প্লানেট

বন্যা প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা যুগ যুগ ধরে মানুষের জীবন ও পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। যদিও বন্যার কিছু প্রাকৃতিক উপকারিতা রয়েছে, যেমন- নদী উপত্যকায় পলিমাটি সঞ্চিত হওয়া, যা কৃষির জন্য উপকারী, কিন্তু বন্যার কারণে জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়ে। সম্প্রতি বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার প্রকোপ বেড়ে গেছে, যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাণী ও উদ্ভিদের বাসস্থান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রজাতি বিলুপ্তির আশঙ্কা আরও বেড়ে গেছে।

প্রাণীর বাসস্থান ধ্বংস ও বিলুপ্তির ঝুঁকি
বন্যার ফলে প্রাণীরা তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হারায়, যা তাদের জীবনচক্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে নদী, খাল, হ্রদ, এবং জলাভূমি অঞ্চলে বসবাসকারী প্রাণীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার সময় তাদের নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়, ফলে তারা মারা যেতে পারে বা ভিন্ন কোনো এলাকায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ, বন্যার কারণে বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ, উভচর ও স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের বাসস্থান হারিয়ে ফেলে। অনেক প্রজাতির প্রাণী এ সময় খাবার সংকটে পড়ে, যা তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। প্রাণী ও পাখিদের বাসস্থান হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন গাছ ও গুল্ম বন্যার পানিতে ডুবে যায়, ফলে তাদের খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙে পড়ে। বন্যার কারণে নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীদের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। কিছু প্রজাতি যেমন- মিঠাপানির মাছ এবং উভচর প্রাণী বন্যার সময় তাদের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়, যা ভবিষ্যতে তাদের সংখ্যা কমিয়ে দেয়।

উদ্ভিদ প্রজাতির ওপর প্রভাব
বন্যার ফলে শুধু প্রাণীই নয়, উদ্ভিদের ওপরও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে পানিতে ডুবে থাকা উদ্ভিদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হতে পারে। বিশেষত নদী উপত্যকা ও নিম্নাঞ্চলে থাকা উদ্ভিদ প্রজাতি বন্যার পানিতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। বন্যায় পলিমাটি সঞ্চিত হওয়া কৃষির জন্য উপকারী হলেও, অতিরিক্ত পলি জমে গেলে তা উদ্ভিদের শিকড়কে ঢেকে ফেলে এবং তাদের পুষ্টি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলস্বরূপ, অনেক উদ্ভিদ প্রজাতি মারা যায় বা তাদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সুন্দরবনে প্রায় প্রতি বছর বন্যার কারণে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ক্ষতি হয়, যা প্রাকৃতিকভাবে ওই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যার ভূমিকা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, তুষার গলার হার বৃদ্ধি, এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হচ্ছে। এই অতিরিক্ত বন্যা বিশেষ করে জলাভূমি, নদী উপত্যকা ও সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে থাকা প্রাণী ও উদ্ভিদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে ফেলে।

প্রতিকার ও সংরক্ষণ উদ্যোগ
বন্যার ফলে জীববৈচিত্র্যের ওপর যে ক্ষতি হয়, তা রোধ করতে প্রয়োজন সুপরিকল্পিত সংরক্ষণ উদ্যোগ। বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকার এই বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করছে। বন্যার ঝুঁকি কমানোর জন্য বনাঞ্চল ও জলাভূমি রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এর পাশাপাশি, বন্যাপ্রবণ এলাকায় টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং বন্যা প্রতিরোধে শক্তিশালী অবকাঠামো নির্মাণ করা প্রয়োজন। বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ পুনর্গঠন সম্ভব। স্থানীয় জনগণকে সচেতন করা এবং তাদের সঙ্গে কাজ করা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। একই সঙ্গে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করে বন্যার প্রভাব কমানো সম্ভব।

আরবি/ আরএফ

Link copied!