এক সময় যে তেলাপিয়া মাছকে অবহেলিত বা নিম্নমানের মাছ বলে ভাবা হতো, আজ তা নিয়ে চমকে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষত ফুরাত ও নীলনদের মাছ হিসেবে পরিচিত তেলাপিয়াকে ইসলামি আবহে অনেকেই ‘জান্নাতি মাছ’ বললেও, বর্তমানে এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিজ্ঞান ও পুষ্টিগুণের ভিত্তিতে।
সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, তেলাপিয়া মাছ প্রজনন স্বাস্থ্য ও শিশুদের বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই মাছে থাকা ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি নারীদের গর্ভধারণে সহায়ক হতে পারে। একই সঙ্গে শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিতেও কার্যকর হতে পারে এসব উপাদান।
তবে এ মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে খামারে চাষ করা তেলাপিয়া মাছ দূষিত পানি ও রাসায়নিক খাদ্যে বড় হয়, যা শরীরে ভারী ধাতু জমার ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই বিষক্রিয়া গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এ কারণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, তেলাপিয়া মাছ খেতে হলে তা যেন নিরাপদ উৎস থেকে আসে এবং সঠিকভাবে পরিষ্কার ও রান্না করা হয়। স্বাস্থ্যসম্মত চাষপদ্ধতি ও খাদ্যের মান নিশ্চিত করলেই তেলাপিয়া হতে পারে কম খরচে একটি পুষ্টিকর আমিষের উৎস।
তেলাপিয়া মাছের এই ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও নিরাপদ খাদ্য বাছাইয়ের বিষয়টি। একে ‘জান্নাতি মাছ’ বলার পেছনে যদি ধর্মীয় ঐতিহ্য থাকে, তবে বিজ্ঞানের চোখেও এটি উপকারী-তবে শর্ত একটাই, নিরাপদ চাষ ও গ্রহণযোগ্য মান নিশ্চিত করতে হবে।