নিজের পরিবারকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসার তৃপ্তি-আনন্দ বলে বোঝানো যায় না। সেটা যদি হয় বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায়, তাহলে তো কথাই নেই। বাসায় ছোট সদস্য থাকলে ছুটির দিনে চিড়িয়াখানায় দিতে পারেন এক চক্কর। রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বন্যপ্রাণীর এমন এক সংমিশ্রণ; যেখানে পরিবারকে নিয়ে কল্পনার বাস্তবজগতে হারিয়ে যাওয়া যায়। দেখা যায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দুর্লভ, বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী। চিড়িয়াখানায় চাইলে পরিবার নিয়ে সারা দিন ঘুরতে পারবেন আর দেখতে পারবেন অজানা সব প্রাণী। হরিণ খেকে শুরু করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ময়ূর, হাতি, গন্ডার, জিরাফ, বানর, সিংহ, অজগর সাপ, জলহস্তি, ভল্লুক, হাতি, কুমির, জেব্রা, পানকৌড়ি ইত্যাদি পশু-পাখি। এ ছাড়া চিড়িয়াখানায় আছে সুন্দর লেক। যেখানে বসে মনের অজান্তেই হারিয়ে যাওয়া যায়। চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করেই দেখতে পাবেন হরিণ। আর এই দৃশ্য আপনাকে প্রথমেই মুগ্ধ করবে। এ দৃশ্য ভুলতে না ভুলতেই একটু সামনে গিয়ে দেখতে পাবেন বানরের খেলা করার দৃশ্য। যে দৃশ্য ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তিও মুগ্ধতার সঙ্গে অবলোকন করে। এই জায়গার ভেতরে বানরদের গোসল করার জন্য ছোট ২টি পুকুর আছে। যেখানে প্রায় সময়ই বানরের ছোট ছোট বাচ্চাদের গোসল করতে দেখা যায়। আর এ দৃশ্যটি ছোট্ট শিশুদের বেশি আনন্দ দিয়ে থাকে। চিড়িয়াখানায় সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত দৃশ্য হচ্ছে, বনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বনের রাজাকে দেখতে সব দর্শনার্থীই ভিড় জমায়। চিড়িয়াখানায় স্বচোখে বাঘকে দেখলেই বুঝতে পারা যায় বাঘ কত হিংস্র। অবশ্য এ খাঁচার মধ্যে হিংস্র হয়েও লাভ নেই। এজন্যই হয়তো বনের রাজা প্রায় সময়ই ঘুমিয়ে থাকেন। বিশেষ করে দুপুরবেলা আপনি চিড়িয়াখানায় গেলে বাঘকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পাবেন। বাঘের পাশেই আছে এশিয়ান কালো ভল্লুক। এ ভল্লুক দেখতে বেশ বড়সড়। গায়ের রং কুচকুচে কালো। এদের সাধারণত ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও জাপানে পাওয়া যায়। ভল্লুককে দেখতেই আপনার মনে পড়ে শৈশবে বইয়ের পাতায় দেখা ভল্লুকের ছবি। যেটা আপনি এখন নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছেন। এখান থেকে ডানদিকের পথে হেঁটে গেলেই দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য। যেখানে বসে ক্লান্ত-বিষাদ দূর করা যায়। প্রিয়জনকে নিয়ে হারিয়ে যাওয়া খুনসুটির জগতে। এ গাছপালা প্রকৃতির মধ্যেই খুঁজে পাবেন বিভিন্ন প্রকৃতির বাজপাখি। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার মধ্যে আছে শিশুদের জন্য দৃষ্টিনন্দন শিশুপার্ক। এ পার্কে ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে বড়দেরও শিশুসুলভ আচরণে মেতে উঠতে দেখা যায়। শিশুরা হারিয়ে যায় আনন্দের কোলাহলের আড্ডাখানায়। শিশুপার্কের পাশ দিয়ে যে পথটি চলে গেছে সেখানে একটি মনোরম লেক দেখতে পাবেন। এখানে বসে অনেকেই বিশ্রাম করেন।
ঢাকার যে কোনো স্থান থেকে মিরপুরগামী লোকাল বাস অথবা সিএনজি করে একদম চিড়িয়াখানা গেটের কাছে যেতে পারবেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়িও নিয়ে যাওয়া যায়। তবে অনেক সময় ডিরেক্ট বাস না পেলে মিরপুর ১ এর যে কোনো বাসে উঠে সনি সিনেমা হলে নেমে সেখান থেকে রিকশায় করে যেতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :