ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

যাদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিচ্ছে ফেসবুক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০২:৪৩ পিএম
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি স্থির চিত্র। ছবি- সংগৃহীত

অ্যাকাউন্ট সিরিয়ে দেওয়ার মিশনে নেমেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক থেকে এক কোটি অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে। পর্যায়ক্রমে আরও অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলবে মেটা।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এই অ্যাকাউন্টগুলো বট বা সাধারণ স্প্যাম অ্যাকাউন্ট ছিল না বরং প্রকৃত ব্যবহারকারীরাই অন্য পরিচয় দিয়ে প্ল্যাটফর্মের নীতি লঙ্ঘন করেছিলো। এখন থেকে যারাই ছদ্মবেশ ধারণ ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করবে তাদের অ্যাকাউন্ট ডিলেট করে দেবে মেটা।

মেটা জানিয়েছে, জনপ্রিয় কনটেন্ট নির্মাতাদের নাম, ছবি বা পরিচয় ব্যবহার করে অনেকেই ফেসবুকে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করেছিলেন। এসব প্রোফাইল সাধারণ ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করত এবং অ্যালগরিদমকে ফাঁকি দিয়ে নিজেদের পোস্ট ভাইরাল করতে চেষ্টা করত। এতে প্রকৃত নির্মাতারা ক্ষতির মুখোমুখি হতো।

প্রায় ৫ লাখ অ্যাকাউন্ট স্প্যাম বা বটের মতো আচরণ করছিল এ কারণে সেগুলোকে মুছে ফেলেছে ফেসবুক। এসব অ্যাকাউন্ট একই কনটেন্ট বারবার পোস্ট করে ফিডকে বিরক্তিকর ও অপ্রাসঙ্গিক করে তুলছিল।

তৃতীয়ত, ‘অননুমোদিত কনটেন্ট’ বা অনুমতি ছাড়া অন্যদের লেখা, ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করা অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ফেসবুক।

মেটা জানিয়েছে, ছদ্মবেশ ধারণ শুধু পাবলিক ফিগার বা ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য নয়, বরং প্ল্যাটফর্মে ‘আসল কণ্ঠস্বর’ ও অরিজিনাল কনটেন্টের নাগালের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এই প্রোফাইলগুলো অনেক সময় যাদের নাম ব্যবহার করে, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ফলোয়ার বাড়ায়। এতে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং ফেসবুকের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হয়।

মেটা আরও বলছে, নকল কনটেন্ট বা কপি-পেস্ট করে পোস্ট করা হলে সেই কনটেন্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে মনিটাইজেশন সুবিধাও বাতিল করা হতে পারে।

তবে কেউ যদি ট্রেন্ডিং কনটেন্টের সঙ্গে নিজের মত, ব্যাখ্যা বা সম্পাদনা যোগ করে, তাহলে সেটিকে ‘অরিজিনাল’ হিসেবে গণ্য করা হবে।

জানা গেছে, মেটা এআই ‘সুপার ক্লাস্টার’ তৈরি করেছে। যার সাহায্যে খুব সহজেই কার কনটেন্ট আসল কারটা নকল সেটা সহজেই শনাক্ত করে ফেলছে। এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে যাচ্ছে।

ফেসবুক কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য বেশ কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- ১. অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে। ২. কনটেন্টে নিজের বক্তব্য, মতামত বা সম্পাদনা যুক্ত থাকতে হবে। ৩. সঠিক শিরোনাম, হ্যাশট্যাগ এবং কনটেন্ট অনুযায়ী ক্যাপশন দিতে হবে। ৪. ক্যাপশনে কোনো ধরনের লিঙ্ক না দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে ফেসবুকে এমন অভিযানে অনেকের আসল অ্যাকাউন্ট গুলোও বন্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই তাদের বৈধ অ্যাকাউন্টও বন্ধ হয়ে গেছে।

রেডিট ও এক্স ব্যবহারকারি অনেকেই বলছেন, তাদের বছরের পর বছর ধরে জমিয়ে রাখা স্মৃতি, যোগাযোগ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ডিলিট হয়ে গেছে।

যদিও মেটা দাবি করছে, কেবলমাত্র নিয়ম লঙ্ঘনকারী অ্যাকাউন্টই সরানো হয়েছে। এরপরও  ভুলবশত কোনো বৈধ অ্যাকাউন্ট বন্ধ হলে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

তবে অনেকেই এই প্রক্রিয়াকে জটিল ও অনিশ্চিত বলে মনে করছেন।