কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে গোটা বিশ্বেই চলছে আলোচনার ঝড়। অনেকের মনেই প্রশ্ন—এই প্রযুক্তি কি ভবিষ্যতে মানুষের চাকরি হুমকির মুখে ফেলবে? সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন গবেষণা ও বিশ্লেষণ বলছে, এ আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়।
এআই বিশেষজ্ঞ অ্যাডাম ডর সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ২০৪৫ সালের মধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের অধিকাংশ পেশায় জায়গা দখল করে নিতে পারে। তবে তিনি জানিয়েছেন, অন্তত তিনটি পেশায় এখনো মানুষের বিকল্প থাকবে না।
কোন পেশায় এআই আসতে পারবে না?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমানে সব সেক্টরেই আধিপত্য দেখাচ্ছে। সব কাজই এটির মাধ্যমে করা সম্ভব হবে এবং সফলতাও আসছে। তবে রাজনীতিবিদ, যৌনকর্মী ও বিচার প্রক্রিয়ার মানবিক ব্যাখ্যাভিত্তিক কাজ- এই তিনটিতে নৈতিকতা, আবেগ এবং সামাজিক ব্যাখ্যা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এখনো সেখানে এআইয়ের সক্ষমতা সীমিত। ফলে সেখানে এআইয়ের জায়গা দখল করা বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। সুতরাং আপাতত এই তিন পেশায় মানুষের বিকল্প নেই। মানুষই এই জায়গাগুলোতে থাকবে।
ডাক্তারি ও প্রযুক্তিনির্ভর পেশা
অ্যাডাম ডর মনে করেন, ডাক্তারি পেশায়ও এআই-এর প্রভাব প্রত্যক্ষ হবে। রোগ নির্ণয়, অস্ত্রোপচারে রোবটিক হস্তক্ষেপ এবং চিকিৎসা বিশ্লেষণে এআই ইতোমধ্যেই ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে এই খাতেও মানুষের ওপর নির্ভরতা কমে আসবে।
নতুন চাকরির সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে
তবে চাকরির বাজারে এআই শুধুই হুমকি নয়। বরং বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, নতুন ধরনের বহু পেশা তৈরি হবে যা আগে ছিল না। যেমন- প্রম্পট ডিজাইনার, এআই ট্রেইনার, এথিক্যাল এআই কনসালট্যান্ট, অটোমেশন অডিটর।
‘এআইয়ের দাদা’র সতর্কতা
বিশ্বখ্যাত গবেষক জিওফ্রে হিন্টন, যাকে ‘গডফাদার অব এআই’ বলা হয়, তিনি জানিয়েছেন, এআই মানুষের চাকরি নেবে না, বরং চাকরির ধরনে আমূল পরিবর্তন আনবে। তাই এখন থেকেই পেশাদারদের এআই-এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।
সারা বিশ্বের শ্রমবাজারে এআই-এর প্রভাব বাড়ছে এবং তা আর অস্বীকার করার জায়গা নেই। যদিও কিছু পেশা এখনো নিরাপদ, তবে বেশিরভাগ কাজেই এআই-এর ছায়া পড়ছে। তাই ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হতে হলে এখন থেকেই স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও প্রযুক্তিগত মানিয়ে নেওয়াই হবে মূল চাবিকাঠি।