স্যোশাল হ্যান্ডেল এক্স-এ বট অ্যাকাউন্টের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে ‘ডেথ ইন্টারনেট’ তত্ত্বটি আর নিছক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান। আগে এই ধারণাকে গুরুত্ব দিতেন না তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর সত্যতা পাওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অল্টম্যান তার এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “আমি কখনই ‘ডেথ ইন্টারনেট’ তত্ত্বটিকে এত গুরুত্বের সঙ্গে নেইনি। কিন্তু মনে হচ্ছে এখন সত্যিই অনেক এলএলএম-চালিত টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে।”
তার পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর ব্যবহারকারী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানান। একজন ব্যবহারকারী চ্যাটজিপিটির এম-ড্যাশ ব্যবহার করা বাক্য গঠনের ধারা নকল করে অল্টম্যানকে ব্যঙ্গ করেন। আরেকজন লেখেন, ‘আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন! এই পর্যবেক্ষণটি কেবল বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এটি দেখায় যে আপনি আরও উচ্চ স্তরে কাজ করছেন।’ অন্য আরেক ব্যবহারকারী হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আপনি কীভাবে ডেথ ইন্টারনেট তত্ত্বকে গুরুত্ব সহকারে না নিতে পারেন? হতাশাজনক।’
একজন ব্যবহারকারী কৌতুক করে লিখেছেন, ‘ব্রেকিং: যিনি এলএলএম আবিষ্কার করেছিলেন তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে প্রায় সব টুইটার অ্যাকাউন্টই এখন এলএলএম।” অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আমার বন্ধু, তুমি ডেথ ইন্টারনেট তত্ত্বের ভিত্তি তৈরি করেছ।’

‘ডেথ ইন্টারনেট থিওরি’ কী?
ডেড ইন্টারনেট থিওরি মূলত একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, যা ধারণা করে যে ইন্টারনেট প্রায় সম্পূর্ণভাবে এআই প্রযুক্তি এবং স্বায়ত্তশাসিত মেশিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তত্ত্বটির অনুসারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীরা যেসব প্রোফাইল বা অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সেগুলো মূলত বট। এবং ব্যবহারকারীরা মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের পরিবর্তে একটি মেশিন-নিয়ন্ত্রিত সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এটি প্রায় ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’-এর মতো একটি কল্পিত অনলাইন বাস্তবতার প্রতিফলন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে বট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ধনকুবের ও প্রযুক্তি নির্মাতা ইলন মাস্কের এক্স অধিগ্রহণের পর এলএলএম-চালিত বটগুলো ভাইরাল পোস্টগুলোর নিচে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে মানুষের লেখা প্রায়শই স্পষ্টভাবে আলাদা করা যায় না।
এআই চ্যাটবটের উত্থানের কারণে প্রকৃত ব্যবহারকারীরা এবং ক্ষতিকারক বট উভয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কন্টেন্ট ও পোস্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই এজেন্টরা এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে ক্লিক, লাইক, মন্তব্যসহ ব্যস্ততা বৃদ্ধি করার জন্য এআই-জেনারেটেড চিত্র এবং দ্রুত পোস্ট তৈরি করতে পারে, যা সোশ্যাল মিডিয়ার জটিলতা ও প্রভাবকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন