ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

মেয়ে থেকে ছেলে হলেন ১৮ বছরের রুমি!

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম
মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া রাফি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মেয়ে হিসেবে বেড়ে উঠে রুমি আক্তার। চলাফেরা ও কথাবার্তা মেয়েদের মতোই স্বাভাবিক ছিল। তবে ১৮ বছরের পা দেওয়ার পর থেকেই শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সে পুরোপুরি ছেলে থেকে মেয়েতে রুপান্তর হয়ে যায়।

এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের মোতাজুড়ি পোড়াবাসা খানমোড় গ্রামে ঘটে। তিনি ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম ও হাজেরা বেগম দম্পতির সন্তান ছিলেন। মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর হওয়ার পর রুমি আক্তার থেকে তার নাম রাখা হয় রাফি।

এ বছরের ২২ মে বিষয়টি প্রথম প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে কৌতূহলী মানুষ রাফিকে এক নজর দেখার জন্য তার বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করেন। পরে পরিস্থিতি এড়াতে পরিবার তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেন।

মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া রাফি হেঁটে বেড়াচ্ছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দারোগালী সুন্দইল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই অনুভব করতাম আমি আলাদা। ধীরে ধীরে শরীরেও ছেলেদের মতো পরিবর্তন দেখি। এখন নিজেকে ছেলে হিসেবে চিনতে পারি এবং ডাক্তারও তা নিশ্চিত করেছেন।’

তার বাবা-মা এবং প্রতিবেশীরা জানান, গত এক বছর ধরেই তার আচরণ ও শারীরিক পরিবর্তন ছেলেদের মতো হতে শুরু করে। বিয়ের প্রস্তাব এলে সে বারবার অস্বীকৃতি জানায়, তখন থেকেই তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খেয়াল করতে শুরু করেন।

রাফি দোকানে দাঁড়িয়ে আছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনার পর তাকে মেডিকেল চেকআপে পাঠাই। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হই সে ছেলে।’

ধলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. বাহাউদ্দিন সরোয়ার রিজভী বলেন, ‘ইউপি সদস্য আমাকে জানালে রাফির সঙ্গে কথা বলি। সে নিজেই নিজের পরিবর্তনের কথা অকপটে স্বীকার করে।’

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাফির দেহে ছেলেদের বৈশিষ্ট্য ধীরে ধীরে প্রকট হয় এবং এটি একটি স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া। এমন ঘটনাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ইন্টারসেক্স ভেরিয়েশন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।

চশমা পড়ে রাফি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চিকিৎসকদের মতে, এটি একটি স্বাভাবিক হরমোনগত প্রক্রিয়া এবং এতে লজ্জার কিছু নেই। সমাজকে এমন বিষয় নিয়ে সচেতন হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মান ও সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে হবে।