জেআইসি সেল বা ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত স্থাপনায় গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে তিন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনাল-১–এ হাজির করে পুলিশ।
হাজির তিন কর্মকর্তা হলেন: ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ এবং লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক।
ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত প্যানেলে আজ স্টেট ডিফেন্স এবং উপস্থিত আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন।
গত ৭ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জেআইসি সেলে সরকারবিরোধী মতাদর্শের ব্যক্তিদের গুম ও নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম হওয়া ২৬ জনের ঘটনার বিবরণ উপস্থাপন করেন। এসব ঘটনার ভিত্তিতে পাঁচটি অভিযোগ এনে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আবেদন করেন তিনি। পরে স্টেট ডিফেন্স ও গ্রেপ্তার তিন আসামির পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হলে আজকের দিনটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
গত ২৩ নভেম্বর পলাতক আসামিদের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ করে ট্রাইব্যুনাল। প্রথমে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে আগ্রহী হন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ৩ ডিসেম্বর তিনি সরে দাঁড়ালে মো. আমির হোসেনকে শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা তিন সেনা কর্মকর্তাকে প্রথমবারের মতো ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পলাতক আসামিদের হাজিরার জন্য সাত দিনের মধ্যে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে, ৮ অক্টোবর মামলার ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল সবার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন