বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু

বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সিআইডি বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।

তিনি ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নাহার ম্যানেজমেন্ট ইনকরপোরেটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। ২০০৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের নামে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি ফ্ল্যাট কেনেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবসা করার জন্য দুবাইয়ে র‌্যাপিড র‌্যাপ্টর এফজিই এবং জেবা ট্রেডিং এফজিই নামে ২টি প্রতিষ্ঠান খোলেন। এছাড়া তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরীর নামে আল-বারশা সাউথ-থার্ড এলাকায় কিউ গার্ডেন্স ও বুটিক রেসিডেন্সে ২টি ফ্ল্যাট কেনেন। যার দাম ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ দিরহাম। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং আরব আমিরাতে ৬২০টি বাড়ি কেনেন। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৮ কোটি ডলার। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিজের ও স্ত্রী রুখমিলা জামানের নামে যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ে ৮টি প্রতিষ্ঠান খোলেন, যার স্থায়ী ও চলতি সম্পদের মূল্য ২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত যে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সেই তালিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী বা তার পরিবারের কারও নাম নেই। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী যে সম্পদ বিবরণী জমা দেন, সেখানে তার বিদেশে থাকা সম্পদের কোনও তথ্য নেই। অর্থপাচার, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুসারে একটি সম্পৃক্ত অপরাধ বিধায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি’র ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে আছে দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা। এর মধ্যেই তিনি এখন লন্ডনের আলিশান এপার্টমেন্টে বসবাস করছেন। যে বাড়িতে তিনি বসবাস করছেন তার বাজারমূল্য এক কোটি ৪০ লাখ ডলার।

বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ। কয়েক মহাদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তার এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে কয়েকশো বিলাসবহুল বাড়ি, বিলাসবহুল গাড়ি, কুমিরের চামড়া দিয়ে তৈরি জুতা, ইটালিয়ান স্যুট প্রভৃতি। দোহাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সাবেক মন্ত্রীর সম্পদের এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ‍‍`দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস‍‍` শিরোনামের ২৫.১১ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রতিবেদনটি আল-জাজিরা ইংলিশ-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়।

এবারই প্রথম নয়, এর আগেও সাইফুজ্জামানের বিপুল সম্পত্তির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। স্বৈরাচার হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিদেশি সম্পদের তদন্তে সহায়তা চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকার ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এতে যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ১৫০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির অর্থের উৎস শনাক্তকরণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনা ও তার সহযোগীরা দেশের ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন কি না, তার তদন্ত করছে অন্তর্র্বতী সরকার।

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন কোম্পানির সম্পত্তি আছে বলে চলতি বছরের শুরুতে জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে। সেদেশে যে বাংলাদেশিদের এ রকম ‍‍`অব্যাখ্যাত সম্পদ‍‍` আছে, এটি তারই নজির বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন দপ্তর ও কোম্পানি-সংক্রান্ত দপ্তরের নথি খতিয়ে দেখেছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। তাদের অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি মূল্যের অন্তত ২৮০টি সম্পত্তি অর্জন করেছে।

এসব সম্পত্তির বেশিরভাগই ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কেনা হয়েছে। আর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। অর্থাৎ তিনি ভূমিমন্ত্রী থাকাকালীনই এসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে।

এসব সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের ফিটজরোভিয়া এলাকায় এমারসন বেইনব্রিজ হাউস, পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে ৬১টি বাড়ি এবং ব্রিস্টলে একটি সমবায় সুপারমার্কেট। যুক্তরাজ্যে এসব সম্পত্তি কেনার অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই। যদিও নথিপত্র দেখে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, কিছু সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে বন্ধকি ঋণ নেওয়া হয়েছে।

তবে সাইফুজ্জামানের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, তার মক্কেলের ‍‍`লুকানোর কিছু নেই‍‍` এবং তিনি কোনোকিছু চুরি করেননি।

চলতি বছরের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তার বিদেশের সম্পত্তি আন্তর্জাতিক ব্যবসার আয় থেকে এসেছে।

বছরের শুরুর দিকে ব্লুমবার্গ নিউজও এক প্রতিবেদনে বলে, সাইফুজ্জামান ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি রিয়েল এস্টেট সম্পত্তির মালিক।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত মাসে সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে সাবেক এই মন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তথ্যও চেয়েছে দুদক।

আরবি/ এইচএম

Link copied!