ক্যাপসিকাম, যা আমরা সাধারণত মরিচ হিসেবে চিনে থাকি, এটি এক প্রকারের সবজি যা রান্নায় স্বাদ ও রঙ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন রঙের হতে পারে যেমন—লাল, সবুজ, হলুদ কিংবা কমলা। দেখতে আকর্ষণীয় এই সবজিটি শুধু রান্নার স্বাদই বাড়ায় না, এর স্বাস্থ্যগুণও অসংখ্য। ক্যাপসিকামে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ উপাদান আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা
ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ
ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ই থাকে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ
এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যেমন বিটা-ক্যারোটিন ও লুটেইন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক এবং কোষের ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হজমে সহায়ক
ক্যাপসিকাম হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবারযুক্ত হওয়ায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হয়।
চোখের যত্নে উপকারী
ক্যাপসিকামে থাকা বিটা-ক্যারোটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে
এতে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন
ক্যাপসিকামে থাকা কিছু যৌগ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ক্যাপসিকাম কীভাবে খাবেন
১/ ক্যাপসিকাম কাঁচা খাওয়া যায়। লাল, সবুজ ও হলুদ ক্যাপসিকাম ছোট টুকরো করে টমেটো, শসা, গাজর ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়ে সালাদ হিসেবে খেলে তা অত্যন্ত পুষ্টিকর হয়।
২/ ক্যাপসিকাম আলু, পনির, চিংড়ি, ডিম ইত্যাদির সঙ্গে ভেজে বা রান্না করে খাওয়া যায়।
৩/ অল্প তেলে ক্যাপসিকাম স্টার-ফ্রাই করলে এর পুষ্টিগুণ অনেকটা বজায় থাকে। আবার হালকা করে গ্রিল করেও খাওয়া যায়—যা স্যান্ডউইচ বা বার্গারের সঙ্গে ভালো যায়।
৪/ গ্রিল বা ভাজা ক্যাপসিকাম দিয়ে স্বাদযুক্ত ভর্তা বা চাটনি তৈরি করা যায়। এতে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ ও সামান্য সরিষার তেল যোগ করলে চমৎকার স্বাদ হয়।
৫/ ক্যাপসিকাম দিয়ে সুপ, পাস্তা সস, বা ডিপ বানিয়ে খাওয়া যায়। এটি খাবারে অতিরিক্ত ঘনত্ব ও রঙ যোগ করে।
৬/ ক্যাপসিকামের ভেতরে কিমা, চাল, ডাল, বা পনির ভরে বেক বা রান্না করে একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর পদ তৈরি করা যায়।
কিছু টিপস:
কাঁচা খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ক্যাপসিকাম রান্না করলে খুব বেশি না ভাজা ভালো—অতিরিক্ত গরমে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ক্যাপসিকাম সংরক্ষণ করতে ফ্রিজে রাখলে তা দীর্ঘদিন তাজা থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :