বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৫, ১১:০৩ এএম

বিধিমালা না থাকায় কার্যকর হচ্ছে না ডোপ টেস্ট

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৫, ১১:০৩ এএম

বিধিমালা না থাকায় কার্যকর হচ্ছে না ডোপ টেস্ট

ছবি: সংগৃহীত

মাদকের ভয়াল গ্রাসে আচ্ছন্ন তরুণসমাজ। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নেই কার্যকর পদক্ষেপ। ফলে দেশ থেকে কোনোভাবেই মাদক দূর করা যাচ্ছে না। শুধু সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কিন্তু সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশে এখনো ডোপ টেস্ট হয় না। এ ছাড়া এই টেস্ট করার জায়গাও সীমিত। ডোপ টেস্ট নিয়ে এখনো বিধিমালা না হওয়ায় অনেক নির্দেশই বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকমুক্ত দেশ গড়ায় ডোপ টেস্ট খুব জরুরি। এর বিকল্প নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এক পরিপত্রের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে পেশাদার চালকের লাইন্সেস পেতে হলেও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টের কোনো উদ্যোগ নেই।

২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করার আগে এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্ট চালুর সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। দেশকে মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত রাখতে এবং একটি শিক্ষিত ও সুস্থ জাতি উপহার দিতে এই সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি। কিন্তু কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বেশির ভাগই তা বাস্তবায়ন করেনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ডোপ টেস্টের সনদের প্রয়োজন পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ ২০২২ সালে ডোপ টেস্টের সনদের কথা বললেও পরে তা লাগবে না বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো এ উদ্যোগের কথা চিন্তা করেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ডোপ টেস্ট শুরু করেছে। এখন অন‍্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে তারা ভর্তিতে ডোপ টেস্ট করবে কি না। তবে নিশ্চয়ই ডোপ টেস্টের ভালো দিক আছে। সেটা বিবেচনা করে তারা তা চালু করতে পারে।

জানা যায়, পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে গত ফেব্রুয়ারিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য ১৪টি সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে।

২০১৬ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আগস্ট মাসের তথ্যে জানা যায়, গাড়িচালকদের মাদক সেবনের কারণে ৩০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। ৯৮ শতাংশ চালক কোনো না কোনোভাবে মাদক গ্রহণ করেন। ৫০০ জন বাস ও ট্রাকচালকের ওপর জরিপ চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে তাঁরা জানান।

২০০৭ সালে ব্র্যাকের রোড সেফটি কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ভারী যানবাহন (বাস-ট্রাক) চালকদের প্রায় ৬৯ শতাংশ মাদক সেবন করেন। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। বৈশ্বিক বিবেচনায়ও প্রথম সারির দিকে অবস্থান বাংলাদেশের। সড়ক দুর্ঘটনার নেপথ্যে অন্যতম কারণ হলো চালকের মাদকাসক্তি।

বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮৫ থেকে ৯০ লাখ।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ লাখ।

জানা যায়, রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় বিআরটিএ অফিসে পেশাদার লাইসেন্স নেওয়ার সময় ডোপ টেস্ট করা হয়। এটা ছাড়া কোনো পেশাদার চালক নতুন লাইসেন্স নিতে পারছেন না এবং নবায়নও করতে পারছেন না। তবে যারা লাইসেন্স নেওয়ার পর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়িতে ওঠেন, তাঁদের টেস্ট করা যাচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনা ঘটছেই।

সূত্র জানায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদকাসক্ত ব্যক্তি শনাক্ত করতে ডোপ টেস্ট করতে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করার কথা। কিন্তু ২০১৮ সালে আইন পাস হলেও গত সাত বছরে বিধিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়নি। ফলে সরকারি-বেসরকারি চাকরিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে যে মাদকাসক্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, তা হচ্ছে না। এ ছাড়া ডোপ টেস্ট নিয়ে একটি প্রকল্প নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটাও শেষ পর্যন্ত হয়নি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, এখন জরুরি প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে কয়েকটি হাসপাতালেও তা করা হয়। বিধিমালা না হওয়ায় নিজ নিজ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। বিধিমালা হলে চূড়ান্তভাবে বলা থাকবে কত টাকায় কোন পদ্ধতিতে, কোথায়, কিভাবে ডোপ টেস্ট করা যাবে।

জানা যায়, বর্তমানে খসড়াটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগে রয়েছে। বর্তমানে কিছু হাসপাতাল ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ডোপ টেস্টের সীমিত সুযোগ রয়েছে। ডোপ টেস্টের পরিধি বাড়াতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রতিটি জেলায় পরীক্ষাগার স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সব ক্ষেত্রে ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এতে অনেকে মাদক থেকে দূরে থাকবে। মাদক সেবন করলে ড্রাইভিং লাইসেন্স না পেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে অনেকেই মাদক থেকে দূরে থাকবে। আর যারা মাদকে আসক্ত হয়েছে তারাও তাদের প্রয়োজনে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে।

আরবি/এসবি

Link copied!