নারীকে প্রকাশ্যে গালি দেওয়া কারণে হেফাজত ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিল ছয় নারী। যার প্রেক্ষিতে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (৬ মে) একটি বিবৃতি হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে আজিজুল হক বলেন, আমাদের মহাসমাবেশে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুজন বক্তা আপত্তিকর শব্দচয়ন করেছেন, যা আমরা সমর্থন করি না। কেউ এতে আহত হলে তাদের প্রতিও আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে সেক্যুলার প্রগতিশীল ঘরানার যারা এতকাল আলেম-ওলামাকে বিদ্বেষমূলকভাবে ‘জঙ্গি’, ‘মৌলবাদী’, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ ও ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে কটাক্ষ করে এসেছেন, তাদেরও আমরা এ ধরনের আপত্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। শাপলা চত্বরের গণহত্যায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে কারা উৎসাহ দিয়েছিল, তা আমরা ভুলে যাইনি।
‘নারীর প্রতি আমাদের ঘৃণার প্রশ্নই আসে না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মতাদর্শিক লড়াইকে ‘নারীর প্রতি ঘৃণা’ আকারে দেখা স্রেফ মূর্খতা। আমরা আবারও বলছি, যার যার ধর্মীয় বিধান অনুসারে নারীর ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আমরাও সংস্কারকাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী। কিন্তু শুরুতেই আলেম-ওলামা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিশেষজ্ঞকে বাদ দিয়ে একদল এনজিওবাজ নারীবাদীকে নিয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হলো।
নারী কমিশন একচেটিয়া প্রতিবেদন তৈরি করেছে অভিযোগ করে এই হেফাজত নেতা বলেন, যেখানে সেক্যুলার প্রগতিশীল নারী সমাজের স্বার্থ ও মতাদর্শ রক্ষিত হলেও ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারী সমাজের ধর্মীয় চিন্তা ও বিবেচনা উপেক্ষিত হয়েছে। এই বৈষম্য মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, উগ্র ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী কর্তৃক আমাদের ‘নারীবিদ্বেষী’ অপবাদ দেওয়ার অপরাজনীতি বহু পুরনো। অথচ দেশজুড়ে আমাদের মহিলা কওমি মাদ্রাসাগুলোয় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে ছাত্রীসংখ্যা বাড়ছে। সরকারি বরাদ্দমুক্ত এসব মাদ্রাসায় সমাজের হাজার হাজার প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের জন্যও বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়। ফলে এ দেশের নারীদের স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে আমাদেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কখনো আলেম-ওলামার সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না।
মাওলানা আজিজুল হক বলেন, আমাদের এই সামাজিক ভূমিকা ও ধর্মীয় অবস্থান আধুনিক ব্যবস্থায় এ দেশের নারীকে ‘পণ্য’ বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্তরায় বলেই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে একদল উগ্র নারীবাদীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে আমরা ছাড় দেব না।