বুধবার, ০৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৭:৩৫ এএম

ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীন-পাকিস্তানমুখী বাংলাদেশ?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ০৭:৩৫ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর দেশের কূটনৈতিক দৃশ্যপটে এক সুস্পষ্ট পরিবর্তনের আভাস মিলছে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যেখানে উত্তেজনার মধ্য দিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে, ঠিক সেখানেই চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠছে।

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি এ উত্তেজনায় ঘি ঢালে। ভারতীয় সীমান্তে ‘পুশ-ইন’, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে দিল্লির কড়া অবস্থান- সব মিলিয়ে এক জটিল পরিস্থিতির জন্ম হয়েছে।

বিশেষ করে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল, পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের তলানিতে পৌঁছানোরই ইঙ্গিত দেয়। এ পরিস্থিতিতে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মোদীকে নিন্দাবার্তা পাঠানো সম্পর্কোন্নয়নের এক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হিসেবে দেখলেও, বাস্তব চিত্রে এখনও উত্তেজনাই প্রবল।

এদিকে চীন সফর, বিনিয়োগ আকর্ষণ, হাসপাতাল নির্মাণ, চিকিৎসাখাতে সহযোগিতা ও বিমান যোগাযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে বেইজিংয়ের এক-চীন নীতিকে সমর্থন জানিয়েছে, যা কৌশলগতভাবে চীনকে সন্তুষ্ট রাখারই ইঙ্গিত।

এছাড়া চীনের অনুদানে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ, ঢাকায় চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং কৃষি ও প্রযুক্তি খাতে সমঝোতা চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে বহুমাত্রিক রূপ দিচ্ছে।

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্ট।

পাকিস্তানের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। প্রথমবারের মতো নিয়মিত কার্গো শিপিং রুট, বিমান চলাচল পুনরায় চালু, অর্থনৈতিক যৌথ পরিষদ গঠন, সামরিক সহযোগিতা এবং উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক সফর সবই একটি দীর্ঘ বিরতির পর নতুন অধ্যায়ের সূচক।

এসব বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূসের সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব পাকিস্তানকে দক্ষিণ এশীয় কাঠামোয় ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। এটি একদিকে ভারতের প্রভাবকে সীমিত করতে পারে, অন্যদিকে দক্ষিণ এশীয় সমন্বয়ের নতুন ভিত্তি তৈরির সম্ভাবনাও তৈরি করে।

এ পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বাংলাদেশ কি ভারতের প্রভাববলয় থেকে বের হয়ে চীন-পাকিস্তান বলয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?

এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলছেন, ‘এখন আর বলয়ভিত্তিক কূটনীতি বাস্তবসম্মত নয়; বরং প্রতিটি দেশের সঙ্গে পৃথক ও স্বার্থনির্ভর সম্পর্ক বজায় রাখাই হচ্ছে বুদ্ধিদীপ্ত কূটনীতি।’

তবে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখার নামে যদি বাংলাদেশ চীন ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় অতিরিক্ত ঝুঁকে পড়ে, তাহলে ভারতের সঙ্গে সংঘাত তীব্রতর হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারতকে একেবারে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়- বিশেষ করে নিরাপত্তা, অভিবাসন ও বাণিজ্য খাতে।

Link copied!