ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

ভোট জালিয়াতির দায়ে দুই বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দিল যুক্তরাষ্ট্র

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
দুই বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার মিলবোর্ন বরো’র মেয়র নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দুই বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।

শুক্রবার (২০ জুন) জেলা বিচারক হার্ভে বার্টল পৃথক শুনানিতে এই শাস্তি ঘোষণা করেন। 

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নুরুল হাসান (৪৮) ও রফিকুল ইসলাম (৫২)। নুরুল হাসানকে ৩৬ মাস এবং রফিকুল ইসলামকে ১২ মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।

মিলবোর্ন বরোর মেয়র নির্বাচনে প্রতারণার মাধ্যমে ফলাফল প্রভাবিত করার চেষ্টা করে তিন কাউন্সিল সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আদালত।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ডেভিড মেটকাফ জানান, মিলবোর্ন বরো কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এমডি নুরুল হাসান এবং সাবেক সদস্য এমডি রফিকুল ইসলাম পৃথকভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেয়েছেন। অপর অভিযুক্ত কাউন্সিল সদস্য এমডি মুনসুর আলীর সাজা ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে ২৬ জুন।

আদালতের দলিল অনুযায়ী, ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে প্রাইমারিতে পরাজিত হওয়ার পর নুরুল হাসান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়াই শুরু করেন। এরপর তিনি মুনসুর আলী ও রফিকুল ইসলামের সহায়তায় একটি নির্বাচনী ষড়যন্ত্রে জড়িত হন।

তাদের পরিকল্পনায় মিলবোর্নের বাইরে বসবাসকারী ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে ভুয়া ভোটার নিবন্ধন ও মেইল-ইন ব্যালটে ভোট দেওয়া হয়। ভোটারদের নাম, ঠিকানা ও জন্মতারিখ ব্যবহার করে অনলাইনে ভুয়া ভোটার নিবন্ধন করা এবং ব্যালটে জাল স্বাক্ষর করা হয়। তবে, এই প্রতারণা সফল হয়নি; নির্বাচনে হাসান ১৬৫ ভোটে পরাজিত হন।

নুরুল হাসান ৩৩টি অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন, যার মধ্যে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং ভুয়া ভোটার নিবন্ধনের অভিযোগ রয়েছে। তাকে ৩ বছর কারাদণ্ড, এক বছর তত্ত্বাবধানে মুক্তি ও ১ হাজার ৩০০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।

রফিকুল ইসলাম ৭টি অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন এবং তাকে ১২ মাস ১ দিনের কারাদণ্ড, এক বছর তত্ত্বাবধানে মুক্তি, এক হাজার ডলার জরিমানা ও সাত শ ডলার বিশেষ জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।

অপরদিকে, বর্তমানে বরো কাউন্সিল সদস্য এমডি মুনসুর আলীর বিরুদ্ধে ২৫টি অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি সব দোষ স্বীকার করেছেন। তার সাজা ২৬ জুন ঘোষণা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ডেভিড মেটকাফ বলেন, ‘এই আসামিরা তাদের সম্প্রদায়ের ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে জনগণের আস্থা অটুট থাকে।’

এফবিআই ফিলাডেলফিয়া অফিসের বিশেষ এজেন্ট ইনচার্জ ওয়েইন জ্যাকবস বলেন, ‘ভোটার প্রতারণা শুধু ফেডারেল অপরাধ নয়, এটি গণতন্ত্রে জনগণের আস্থা নষ্ট করে।’

ডেলাওয়্যার কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নি জ্যাক স্টলস্টেইমার বলেন, ‘এই মামলায় এফবিআই ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অফিসের সহায়তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি।’

মামলাটি যৌথভাবে তদন্ত করেছে এফবিআই ও ডেলাওয়্যার কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নি অফিস, পরিচালনা করেছেন সহকারী মার্কিন অ্যাটর্নি মার্ক বি. ডুবনফ।