আলোচিত ই-কমার্স প্রতারণার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’-এর অন্যতম প্রধান হোতা ও সিইও আমান উল্লাহ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২৭ জুন) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর একটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা।
সূত্র জানায়, ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন আমান উল্লাহ চৌধুরী।
এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মোট ৫৪টি মামলা দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছে।
তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন, পরে জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক ছিলেন। গণঅভ্যুত্থানকালীন সময় থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বাইরে চলে যান।
বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, আমান উল্লাহ শুধু প্রতারণা চক্রের নেতা নন, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত।
২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন তিনি ঢাকা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের অর্থায়ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি তার এ্যালিফ্যান্ট রোডের অফিসে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ নামের একটি প্রচার সেল গঠন করেন, যেখানে সরকারের ঘনিষ্ঠ একদল আইটি অফিসার ২৪ ঘণ্টা আন্দোলনবিরোধী প্রচার-প্রচারণায় নিয়োজিত ছিলেন।
এ ছাড়াও তিনি আন্দোলনের বিরুদ্ধে অনলাইন প্রপাগান্ডা পরিচালনা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করেন।
তদন্তে আরও জানা যায়, ই-অরেঞ্জ প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ গোপনের কৌশল হিসেবে তিনি সরকারের ছত্রছায়ায় ‘জেলে থাকার নাটক’ করেন, যাতে জনসচেতনতা ও তদন্তকে বিভ্রান্ত করা যায়।
বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা বলেন, ‘আমরা গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে অভিযান চালিয়ে আমান উল্লাহ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :