ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে অধিকাংশ দল একমত: আলী রীয়াজ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। ছবি- সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হলেও কয়েকটি দল এতে আপত্তি জানিয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

রোববার (২৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় অধিবেশনের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকের বৈঠকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশ দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংসদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে কিছু দল সুস্পষ্ট আপত্তিও জানিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশিরভাগ দল দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট (বাইক্যামারাল পার্লামেন্ট) গঠনের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।’

আলী রীয়াজ জানান, ‘আমরা প্রথমে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব করেছিলাম। তবে অনেক দল তা সমর্থন করেনি। পরে আমরা সংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি নামে নতুন কাঠামো প্রস্তাব করেছি, যেখানে এনসিসির ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে এবং কাঠামোগত দিক পরিবর্তন করা হয়েছে।’

নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদ সচল থাকাকালীন নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা, উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠিত হলে তার স্পিকার এবং অন্যান্য বিরোধী দলের একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকবেন।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘পূর্ববর্তী প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে সরাসরি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যা অধিকাংশ দলের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। তাই আমরা নতুন প্রস্তাবে বলেছি, রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে এমন একজন প্রতিনিধি মনোনীত হবেন, যিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলে ১০ বছরের মধ্যে যুক্ত ছিলেন না এবং প্রজাতন্ত্রের কোনো পদে নেই।’

প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতিকে মনোনীত করার প্রস্তাবও রয়েছে। স্পিকার এই কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি বলেন, ‘যখন সংসদ বিলুপ্ত থাকবে, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কার্যকর থাকবে, তখন নিয়োগ কমিটি কীভাবে কাজ করবে এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে শুধু নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ ক্ষমতা থাকা উচিত, অন্য কমিশনগুলোর নয়।’

আলী রীয়াজ জানান, ‘যেসব দল এখনো সম্মতি দেয়নি, তাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ তারা যেন প্রস্তাবগুলো পুনর্বিবেচনা করে। কারণ এই প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক কাঠামো গঠন করা, যাতে সবাই আস্থা রাখতে পারে।’