বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ১১:২০ পিএম

বাসায় ডেকে প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টা, বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাত 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৫, ১১:২০ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহে বাসায় ডেকে প্রেমিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। এ সময় ধর্ষণে বাধা দিলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মেয়েটির হাতে করা হয় ছুরিকাঘাত। এতে বাম হাতের তিনটি রগ কেটে যায়। 

এ ঘটনার ১৫দিন পেরিয়ে গেলেও ছেলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। 

গত ১৬ জুন নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দীবাড়ি এলাকায় চারতলার একটি বাসাতে ১৭ বছর বয়সি কিশোরীকে ডেকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ২০ বছরের তরুণ মাহমুদুল হাসান নাবিদ। এই বাসাতে বসবাস সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ আলমের বড় ভাই কামাল উদ্দিনের। অভিযুক্ত নাবিদ কামাল উদ্দিনের ভাগনে। নাবিদের বাবা মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক এবং মা মোমেনা নাসরিন লাবনীও এই বাসাতে থাকেন। আর ভুক্তভোগি কিশোরী নগরীর কাচিঝুলি এলাকার বাসিন্দা। 

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনরা বলেন, প্রায় এক বছর ধরে মাহমুদুল হাসান নাবিদ ও কিশোরীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। প্রায় সময় ওই বাসাতে মেয়েটির যাতায়াত ছিল। সম্পর্কের বিষয়টি ছেলের বাবা, মা ও স্বজনরা জানত। গত ১৬ জুন খালি বাসায় মেয়েটিকে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নেয় নাবিদ। একটি কক্ষে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেষ্টা চালায়। এতে মেয়েটি বাধা দিলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাতে বাম হাত মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হলে প্রথমে মেয়েটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগি কিশোরী বলেন, ‘ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বাসায় এসেছি। আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নাবিদ এমনটি করবে ভাবতে পারিনি। সে আমার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইছিল। আমি বলে ছিলাম বিয়ের পর সবকিছু হবে। কিন্তু তাতে সে উত্তেজিত হয়ে চাকু দিয়ে আঘাত করে। এ ঘটনায় নাবিদের আত্মীয় স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ আলম শালিস ডেকে কিছু টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করতে চায়। কিন্তু আমার তো মান-সম্মান আছে—টাকা নয়, বিচার চাই। পুলিশও কোনো সহযোগিতা করছে না।’ 

ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, ‘মা মরা আমার মেয়েটির সঙ্গে এমন আচারণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। গত ১৮ জুন কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছে। তারা মীমাংসার জন্য আমাদের থানায় নিয়ে বসেছিল। আমরা বিচার চাই, মীমাংসা নয়। থানায় ও এসপি অফিস দৌড়াদৌড়ি করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। মেয়েটির হাত ভালো করতে হলে চিকিৎসকরা ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’  

ঘটনার বিষয়ে মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে নগরীর নন্দীবাড়ি গিয়ে অভিযুক্ত নাবিদ ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তাদের জন্য বাসার সামনে অপেক্ষা করায় ক্ষিপ্ত হন নাবিদের মামা মামুন। 

তিনি বলেন, ‘নাবিদ এমন কিছু করেনি যে আমাদের বাসার সামনে আপনাদের আসতে হবে। দ্রুত স্থান ত্যাগ করাই আপনাদের জন্য ভালো হবে।’ 

পরে নাবিদের খালু কামাল উদ্দিন এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি আমাদের বাসায় ঢুকে নাবিদকে মারধর করলে নিজের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রে নিজেই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে তার বাবাকে কল করলে আহত অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার পর শুনছি মেয়ে প্রায় সময় বাসায় আসত। এখন তাদের মধ্যে সম্পর্ক কতটুকু এগিয়েছে তা জানি না। বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চেষ্টা করছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছোট ভাই কাউন্সিলর ফরহাদও এ বিষয়ে অবগত হলে সমাধানের কথা বলে। তবে থানায় আমরা কোনো প্রভাব খাটাইনি।’ 

ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবী আবু রায়হান মো.ফয়সাল বলেন, ‘এই ধরনের মামলা মূলত থানায় হয়। কোনো কারণে না হলে আদালতে করা হয়। আমি মেয়েটির অবস্থা দেখেছি, এটি খুবই গুরতর ঘটনা। যেহেতু বাম হাতের তিনটি রগ কেটে গেছে, তা থেকে সুস্থ হতে হলে ভারতে অথবা উন্নত রাষ্ট্রে চিকিৎসা প্রয়োজন। মেয়ের বাবাকে থানায় গেলে পাঠানো হয় এসপি অফিসে—এভাবে পুলিশ কালক্ষেপণ করছে। এতে করে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ সমাজে বাড়বে কমবে না।’ 

ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ আলম বলেন, বিষয়টি আপস-মীমাংসার কথা বলা হলেও কোনো প্রভাব খাটানো হয়নি। 

কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা এসপি অফিসেও গেয়েছিল। তারপর আমার কাছে আসলেও ব্যবস্থার কারণে সময় দিতে পারিনি। তবে জানি বিষয়টি সমাধান হওয়ার কথা। তদন্তের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে গেয়েছিল আমাদের মনে হয়েছে মেয়েটি নিজের হাত নিজেই কেটেছে। তবে উভয় পক্ষকে ডেকে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!